পিরোজপুর প্রতিনিধি
নানা অনিয়মের অভিযোগে পিরোজপুর ১০০ শয্যা জেলা হাসপাতালে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ সোমবার দিনভর এই অভিযানে দুই দালালকে আটক করা হয়। এ ছাড়া ওষুধের হিসাবে গরমিলসহ বিভিন্ন অনিয়মের প্রমাণ পান দুদক কর্মকর্তারা।
আটক দুজন হলেন সদর উপজেলার খামকাটা এলাকার মো. রাহাত রব্বানী (২৪) ও কদমতলা ইউনিয়নের পোরগোলা এলাকার রাজিব মণ্ডল (২০)। তাঁরা দুজনেই স্থানীয় শেফা ডায়াগনস্টিক ক্লিনিকের কর্মী বলে জানা গেছে।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আরএমও নিজাম উদ্দিনকে সঙ্গে নিয়ে দুদক কর্মকর্তারা হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে রোগীদের সুযোগ-সুবিধা থাকা সত্ত্বেও বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগনির্ণয় পরীক্ষা, দালালদের দৌরাত্ম্য, হাসপাতালের রান্নাঘরে অনিয়ম এবং রোগীদের খাবারে কম দেওয়ার প্রমাণ পান তারা।
দুদকের পিরোজপুর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. জাকির হোসেন জানান, অভিযানকালে হাসপাতালের বর্তমান অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে শিশু বিভাগের রেজিস্ট্রারে ওষুধ সরবরাহের কথা থাকলেও বাস্তবে সেখানে কোনো ওষুধ সরবরাহ করা হয়নি বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। তেমনি স্টোররুমে (গুদাম) অভিযান চালানোর সময় কাগজ-কলমে ঠিকাদার কর্তৃক সব ওষুধ সরবরাহের কথা থাকলেও আদতে প্রায় ১ কোটি ৭৬ লাখ ৫৭ হাজার টাকার ওষুধের হদিস পাওয়া যায়নি।
ওই সময় স্টোরকিপার আল আমিন জানান, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সাউথ বাংলা করপোরেশন ঠিকমতো ওষুধ সরবরাহ করতে ব্যর্থ হয়ে সমপরিমাণ অর্থের তিনটি তারিখবিহীন চেক সিভিল সার্জনের কাছে জমা দিয়েছেন।
তিনি আরও জানান, ওষুধ, খাবারের মান ও টেন্ডারের রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। এগুলো পর্যালোচনা করে বিস্তারিত প্রতিবেদন আকারে কমিশনে পাঠানো হবে। কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অভিযানের শুরুতেই দুদক টিম হাসপাতালে প্রবেশকালে ভেতর থেকে দুই দালালকে আটক করে। পরে তাঁদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।
মোবাইল কোর্টের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিয়াজ মাহামুদ জানান, আটক দুজনের সংশ্লিষ্টতার সত্যতা পাওয়ায় প্রত্যেককে ১৫ দিনের জেল ও ১০০ টাকা করে জরিমানা করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।