ঘটনাটি পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার পশ্চিম সেনের টিকিকাটা গ্রামের। স্ত্রীকে জামিনদার করে ব্র্যাক থেকে ২০ লাখ ও বিভিন্ন এনজিও থেকে আরও ৩০ লাখ টাকা ঋণ তোলেন জাকির হোসেন। এবার জমিজমা বিক্রি করে দ্বিতীয় বিয়ে করে নিখোঁজ হন তিনি।
২০১৫ সালের এ ঘটনায় জাকির হোসেন (৪২) ও তাঁর প্রথম স্ত্রী মরিয়ম বেগমকে (৩৮) আসামি করে এনজিওর পক্ষ থেকে পিরোজপুর অর্থ ঋণ আদালতে মামলা করা হয়। মামলা নম্বর-০৩ / ১৭।
স্বামী পলাতক। ঘরে তিন শিশু সন্তান। তাই গ্রেপ্তার থেকে বাঁচতে সন্তানদের নিয়ে একই এলাকায় নানার বাড়িতে আশ্রয় নেন মরিয়ম। দুই বেলা খাবার জোটাতে ঝিয়ের কাজ, কাঁথা সেলাই করেছেন মরিয়ম। এতেও অভাব কাটেনি। নিজে ও বড় মেয়ে শারমিন আক্তার (১৮) প্রায়ই না খেয়ে ছেলে রুম্মান (১১) ও ছোট মেয়ে জান্নাতি আক্তারকে খাওয়ানোর চেষ্টা করতেন।
তবে মরিয়মের সংসারের অবস্থা এবং সন্তানদের আহাজারিতে মন গলে এএসআই জাহিদুল ইসলাম জাহিদের। শিশুদের 'আমরা এখন থাকব কীভাবে? খাব কী? ঘরেতো কিছুই নেই। আমাদের মাকে ছেড়ে দেন। মা কিছু করে নাই।' শিশুদের আহাজারির পরেও মাকে ছেড়ে দিতে পারেননি আদালতের আদেশ পালনের স্বার্থে। তবে মরিয়মকে থানায় রেখে আবার ছুটে যান ওই বাড়িতে। মঠবাড়িয়া বাজার থেকে নিয়ে যান এক মাসের চাল, ডাল, তেল, আলু, লবণ, সাবান, পেঁয়াজ, মরিচ, হলুদ, চিনি, চাসহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী।
এএসআই জাহিদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, মরিয়ম বেগমের সংসারের যে অবস্থা; তাঁর অবর্তমানে এই সংসারের আহার জোগানো কঠিন হয়ে পড়বে। তাই যত দিন মরিয়ম বেগম জেল হাজতে থাকবেন, তত দিন রেশন দিয়ে এই পরিবারকে তিনি সহায়তা করে যাবেন।
প্রসঙ্গত, পুলিশের এই অফিসার এর আগে বরিশালের বানারীপাড়া থানায় কর্মরত ছিলেন। সেখানেও তিনি বিভিন্ন সামাজিক ও মানবিক কাজ করেছেন।