সাগরে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলমান থাকায় বরিশালে মাছের সংকট দেখা দিয়েছে। কিন্তু এই সংকট কিছুটা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা চলছে নদীর পাঙাশে। হঠাৎ আজ শুক্রবার প্রায় ৬০ মণ পাঙাশ উঠেছে বরিশাল মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে। যার মধ্যে ২০ কেজি ওজনের পাঙাশও রয়েছে। এ ছাড়া নদীর ইলিশের সরবরাহ বেড়েছে। উভয় মাছের দাম কেজিপ্রতি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা কমেছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাঙাশ ও ইলিশ দিয়ে ক্রেতার চাহিদা মেটানোর চেষ্টা করছেন তাঁরা। তবে মৎস্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে নদীর পানি বাড়ায় বড় পাঙাশ ও ইলিশের দেখা মিলছে।
আজ সকালে নগরের পোর্ট রোড মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ঘুরে বিপুল পরিমাণ পাঙাশ দেখা গেছে। ইলিশও উঠেছে আগের চেয়ে বেশি। দাম কিছুটা কম হওয়ায় বিক্রেতারা পাঙাশের দিকে ঝুঁকছেন।
আফজাল হোসেন নামক এক চাকরিজীবী ১০ কেজির বেশি ওজনের একটি পাঙাশ গতকাল বৃহস্পতিবার কিনেছেন সাড়ে ৬ হাজার টাকায়। তিনি জানান, এই সময়ে এমন দামে পাঙাশ পাবেন, তা আশা করেননি।
সেখানকার মেসার্স দাস অ্যান্ড ব্রাদার্সের আড়তদার আলম সরদার বলেন, গতকাল থেকে নদীর পাঙাশ বেশি উঠেছে। তাই সরবরাহও অনেকাংশে বেশি। আজ এ মোকামে ৫০-৬০ মণ মাছ এসেছে। কীর্তনখোলা, মেঘনা নদীর এই পাঙাশের প্রতিটির ওজন ৫ থেকে ২০ কেজি পর্যন্ত। গতকাল এর দর উঠেছিল মণপ্রতি ২৫ হাজার টাকা। যার কেজিপ্রতি ৬২৫-৬৫০ টাকা। তবে গত সপ্তাহে ৮০০-৯০০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। পাঙাশের দাম কেজিতে গড়ে কমেছে ৩০০ থেকে সাড়ে ৩০০ টাকা।
এদিকে অপর আড়তদার হারুন অর রশিদ বলেন, পাঙাশের পাশাপাশি নদীর ইলিশের সরবরাহ বেড়েছে। গতকাল এলসি সাইজের (৬০০ থেকে ৯০০ গ্রাম) ইলিশের মণ বিক্রি হয়েছে ৫৪ হাজার টাকা। যার কেজি বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৩৭৫ টাকা। গত সপ্তাহে ইলিশের বিক্রি হয়েছে ২ হাজার টাকা কেজি। গতকাল নদীর ইলিশ সরবরাহ হয়েছিল প্রায় দেড় শ মণ। এ ছাড়া ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি ১ হাজার ১০০ টাকা বিক্রি চলছে।
তিনি আরও বলেন, প্রতি কেজি ইলিশের দাম গড়ে কমেছে ৩০০ টাকা। দুই দিন ধরে ইলিশে দাম কিছুটা কমেছে।
বরিশাল সদর থানা মৎস্য আড়তদার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি খান হাবিব এ প্রসঙ্গে বলেন, ঝড়–তুফানের পর গতকাল বড় আকারের নদীর পাঙাশ ধরা পড়ায় ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি ফুটেছে। এর কোনটার ওজন ১৫ থেকে ২০ কেজিও রয়েছে। তিনি বলেন, পাঙাশের দাম এখন অনেকটা সহনীয়। ইলিশের দামটাও দুই দিন ধরে কমেছে।
বরিশাল জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা (ইলিশ) ড. বিমল চন্দ্র দাস বলেন, সাগরে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ায় এখন নদীর মাছের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। হঠাৎ বড় ধরনের নদীর পাঙাশ ধরা পড়ছে। ঘূর্ণিঝড় রিমালে নদীতে পানি বাড়ায় পাঙাশ পাওয়া যাচ্ছে। মূলত পাঙাশের মৌসুম শীতে। এই সময়ে এত পাঙাশ পাওয়া জেলেদের জন্য খুশির খবর। ইলিশের সরবরাহও একই কারণে বাড়ছে।