বরগুনা প্রতিনিধি
বরগুনায় বামনায় প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নিয়েও সেখানে বসবাস করছেন না বেশ কিছু সুবিধাভোগী। এ সুযোগে তালাবদ্ধ এসব ঘরের বারান্দায় এখন গরু-ছাগল পালন করছেন স্থানীয়রা। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অন্তরা হাওলাদার জানিয়েছেন, তালাবদ্ধ ঘরগুলোর মালিকানা বাদ দিয়ে নতুন করে ভূমিহীনদের ওই সব ঘর দেওয়া হবে।
বামনা উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলার সবচেয়ে ছোট এ উপজেলায় ২০২১ সালের ২৩ জুন ভূমি ও গৃহহীন ২৫৯ পরিবারের প্রত্যেককে প্রকল্পের আওতায় উপহারের ঘরের চাবি দেওয়া হয়। আর চলতি বছরের ২২ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ উপজেলাকে গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করেন।
বামনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্য মতে, প্রকল্পের আওতায় উপজেলার বুকাবুনিয়া ইউনিয়নের লক্ষীপুরা আশ্রয়ণ প্রকল্পে ৪১টি ঘর গৃহহীনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
গত শনিবার লক্ষিপুরা আশ্রয়ণ প্রকল্পে গিয়ে দেখা যায়, ৪১টি ঘরের ২৫ টিতে সুবিধাভোগীরা বসবাস করছেন। বাকি ১৬টি ঘর তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে আছে। তালাবদ্ধ ঘরগুলোর মালিক অনেকেই এখানে বসবাস করছেন বলে জানান প্রকল্পের বাসিন্দারা।
একই ইউপির আরেক সদস্য মাসুম বলেন, বর্তমানে যারা বসবাস করছেন তাঁদের দুর্ভোগের শেষ নেই। পাশের হলতা নদী থাকায় সামান্য জোয়ারের পানি বাড়লেই ঘরগুলো প্লাবিত হয়ে যায়। নদীর পাড়ে উপযুক্ত বেড়িবাঁধ না থাকায় সব সময় আতঙ্কে থাকেন এখানকার বাসিন্দারা। অনেক কষ্টে বসবাস করতে হয় তাঁদের। সুপেয় পানির গভীর নলকূপটিও ১ বছর ধরে নষ্ট রয়েছে। কোনো কাজ না থাকায় ছেলেমেয়েদের মুখে দুমুঠো খাবার অনেক সময় জোটে না। এ কারণে অনেকেই ঘরে তালা দিয়ে চলে গেছে শহরে কাজের সন্ধানে।
বুকাবুনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সবুজ বলেন, ‘আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বরাদ্দ দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। আমরা শুধু প্রকৃত ভূমিহীনদের সুপারিশ করেছি। শুনেছি লক্ষিপূরা আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে অনেকে বসবাস করছেন না। যদি কেউ বসবাস না করে তবে তাঁদের বাদ দিয়ে তালিকা থেকে প্রকৃত ভূমিহীনদের ঘর বরাদ্দ দেওয়া উচিত।’
এ বিষয়ে ইউএনও অন্তরা হাওলাদার বলেন, এ উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর সুবিধাভোগীরা কোনো অনিয়ম করতে পারবে না। যাঁরা বসবাস করছেন না ঘরগুলো তালাবদ্ধ রেখেছেন তাঁদের তালিকা করে নতুন ভূমিহীনদের ঘর দেওয়া হবে।