বরগুনা প্রতিনিধি
ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দিতে বরগুনা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) এক প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে ২৫ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
এর আগে গত ৫ মার্চ এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী। তাঁর অভিযোগ, বরগুনা এলজিইডিতে কর্মরতদের ঘুষ না দিয়ে কোনো কাজ পাওয়া বা সম্পন্ন করা কোনোভাবেই সম্ভব হয় না।
অভিযোগকারীর (ভুক্তভোগী) নাম মো. শহীদুল ইকবাল। তিনি ইবাদ কনস্ট্রাকশন নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, বরগুনা এলজিইডির আওতায় ‘ঘূর্ণিঝড় আম্পান ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পল্লি সড়ক অবকাঠামো সংস্কার’ শীর্ষক প্রকল্পের তিনটি কাজ পাইয়ের দেওয়া বাবদ সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী মনিরুজ্জমানকে গত ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি ২৫ লাখ টাকা ঘুষ দেন।
মৌখিক চুক্তিমতে মেসার্স বরেন্দ্র কনস্ট্রাকশন নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে ওই তিনটি কাজ ঠিকাদার শহীদুল ইকবালকে দেওয়ার কথা থাকলেও তিনি আরও বেশি টাকা ঘুষ নিয়ে তিনটি কাজ অন্য ঠিকাদারকে দিয়েছেন। এ ছাড়া বাকি দুটি কাজও অন্যদের দেওয়ার পাঁয়তারা করছেন।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান নিজেই চাকরির পাশাপাশি ঠিকাদারিও করেন। তিনি কুষ্টিয়ার সৈকত এন্টারপ্রাইজ ও চট্টগ্রামের ইউনুস ব্রাদার্স নামের দুটি লাইসেন্স ব্যবহার করে নিজেই কাজ করছেন।
ঘুষ দেওয়া প্রসঙ্গে শহীদুল ইকবাল বলেন, ‘বিধিমোতাবেক আমাদের কাজ দেওয়া হয় না। তাই বাধ্য হয়েই ঘুষ দিয়ে কাজ পেতে হয়। এখানে কেউই ঘুষ না দিয়ে কাজ পায় না। আবার কাজ পেলেও ঘুষ না দিয়ে তা করানোও সম্ভব হয় না। তাহলে বিল আটকে রাখাসহ নানা হয়রানির শিকার হতে হয়।’
অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
বরগুনা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী সুপ্রিয় মুখার্জি মোবাইল ফোনে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঠিকাদার শহীদুল ইকবালের অভিযোগ পাওয়ার পর প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তর বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। সোমবার এলজিইডির বরিশাল দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী নূর এ শামস বরগুনা কার্যালয়ে এসে অভিযোগের তদন্ত করেছেন। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে বিধি মোতাবেক প্রকৌশলী মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’