পর্যটকে মুখর হয়ে উঠেছে ঝালকাঠিতে ভাসমান পেয়ারার হাট। পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় বিগত বছরগুলোর তুলনায় এ বছর পেয়ারার দাম বেশি পেলেও দাবদাহ ও অনাবৃষ্টির কারণে ফলন কম হওয়ায় হতাশ কৃষকেরা।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ঝালকাঠি, বানারীপাড়া ও স্বরূপকাঠি উপজেলার ৫৫ গ্রামের পেয়ারাবাগান ঘিরে ভাসমান পেয়ারার হাট পর্যটকে মুখর হয়ে উঠেছে।
ঘুরতে আসা আশিক, তুহিন ও রাসেল জানান, পদ্মা সেতুর কারণে দ্রুততম সময়ে দেশ-বিদেশের ভ্রমণপিয়াসিরা এ হাটে এসে হইহুল্লোড়ে মেতে উঠেছেন। পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে গড়ে উঠেছে পার্ক, খাবার দোকানসহ বিভিন্ন ক্ষুদ্র ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান।
এই এলাকার হাজার হাজার মানুষের কাছে পেয়ারা অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ্য ও জীবিকার অবলম্বন।
চাষি ভবেন হালদার, নিশিত হালদার, বিধান রায় জানান, আষাঢ়-শ্রাবণের ভরা বর্ষায় এসব এলাকার নদী-খালজুড়ে থাকে পেয়ারার সমারোহ। পদ্মা সেতুর কারণে পেয়ারার বাজার ভালো হলেও বৃষ্টি না হওয়ায় ও দাবদাহে পেয়ারার ফলন কম হয়েছে। এতে চাষিরা খরচও তুলতে পারবেন না বলে হতাশা প্রকাশ করেছেন।
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, ঝালকাঠি সদর উপজেলার ১৩ গ্রামে ৩৫০ হেক্টর জমিতে, বরিশাল জেলার বানারীপাড়া উপজেলার ১৬ গ্রামে ৯৩৭ হেক্টর, পিরোজপুর জেলার স্বরূপকাঠি উপজেলার ২৬ গ্রামের ৬৪৫ হেক্টর জমিতে পেয়ারার চাষ হয়।
চাষিরা জানান, আবহাওয়ার বিরূপ প্রভাবে অর্ধেকের কম ফলন হয়েছে। পেয়ারাগাছে যে পরিমাণ ফুল এসেছিল, এ বছর বৃষ্টি না হওয়ায় তা অনেকটা ঝরে গেছে। গাছ পুড়ে গেছে এমন মনে হয়। পেয়ারার বাজার ভালো হলেও লাভবান হতে পারবেন না বলে জানান চাষিরা।
এদিকে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থানের প্রকৃতিপ্রেমীরা প্রাকৃতিক নৈসর্গ উপভোগ করার জন্য ভিড় জমাচ্ছেন পেয়ারার রাজ্যে।
ঝালকাঠি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপপরিচালক মো. মনিরুল ইসলাম জানান, দাবদাহ ও অনাবৃষ্টির কারণে পেয়ারার ফলন কম হলেও পদ্মা সেতুর কারণে দাম অনেক বেশি পাচ্ছেন। এতে ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারবেন। এ বছর হেক্টরপ্রতি সাড়ে ১১ থেকে ১২ টন পেয়ারার ফলন হয়েছে।