বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের হাফেজ তুহিন স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঢাকা থেকে ফিরছিলেন গ্রামে। পুরো লঞ্চ যখন আগুনে ছেয়ে যায়, তখন প্রাণ বাঁচাতে আড়াই বছরের শিশু সন্তান তাবাসসুমকে নিয়ে স্ত্রীর হাত ধরে ঝাঁপ দেন নদীতে। কিন্তু তীরের লাগাম পেয়ে হুশ ফিরতেই দেখেন শিশু তাবাসসুম আর কোলে নেই। কখন মেয়ে হাত ফসকে সুগন্ধার পানিতে ভেসে নিরুদ্দেশ হয়েছে টের পাননি বাবা তুহিন।
তুহিন বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। দিনভর সন্তানের খোঁজে কখনো হাসপাতাল কখনো নদীতীরে ছুটে বেড়িয়েছেন হাফেজ তুহিন ও তাঁর স্ত্রী। কিন্তু মরদেহেরও খোঁজ মেলেনি।
তুহিন বলেন, ‘আগুন থিইক্যা বাঁচতে মাইয়া কোলে লইয়া পানতে (পানিতে) লাফ দিছিলাম। পাড়ে উইঠা দেহি মোর গেদু কোলে নাই। হারা দিন বিছরাইছি কোনো হানে পাই নাই। মোরে এট্টু ওর লাশটা অইলেও আইন্না দ্যান।’
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে ঢাকা থেকে বরগুনা যাওয়ার পথে ঝালকাঠির পোনাবালিয়া ইউনিয়নের দেউরী এলাকায় এমভি অভিযান-১০ নামের লঞ্চে আগুন লাগে। দীর্ঘ চেষ্টায় ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। সবশেষ পাওয়া খবরে ৩৯ জনের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেছে প্রশাসন। এর মধ্যে ৩৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয় লঞ্চ থেকে।