পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার ঢেপসাবুনিয়া গ্রামে সুমী আকতার নামে এক গৃহবধূকে যৌতুকের জন্য নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে উপজেলার ঢেপসাবুনিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ নিহত গৃহবধূর স্বামী হৃদয় হাওলাদার ও শাশুড়ি জেসমিন বেগমকে আটক করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ইন্দুরকানি উপজেলার ঢেপসাবুনিয়া গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ফারুক হাওলাদারের ছেলে হৃদয় হাওলাদার (১৮) ও একই গ্রামের প্রবাসী সাহিদা বেগমের মেয়ে সুমী আকতারের (১৭) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের সুবাদে প্রায় এক বছর আগে বিয়ে হয়।
সুমীর নানা সাকায়েত ফরাজী জানান, বিয়ের পর থেকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া-কলহ লেগেই থাকত। সুমীকে তার মায়ের কাছ থেকে মোটরসাইকেল কেনার টাকা আনতে বলেন শাশুড়ি। টাকা না আনায় তাকে তার স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ননদ মিলে ঘরের মধ্যে আটকিয়ে অমানবিক নির্যাতন করেন। নির্যাতনের ফলে মারা যান সুমী। পরে বিষ খেয়েছে বলে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সুমীকে মৃত ঘোষণা করেন। তখন মরদেহ নিয়ে তারা দ্রুত বাড়িতে ফিরে আসেন।
এ ঘটনায় নিহত সুমীর নানা সাকায়েত ফরাজী বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতে সুমীর স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ননদের বিরুদ্ধে ইন্দুরকানি থানায় হত্যার লিখিত অভিযোগ করেছেন।
তবে অভিযুক্তরা বলছেন, যৌতুকের জন্য নয়, স্বামী-স্ত্রীর মনোমালিন্যের কারণে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছে সুমী।
সুমীর শ্বশুর ফারুক হাওলাদার বলেন, ‘স্বামী-স্ত্রীর মনোমালিন্য হলে ঘরে থাকা চাউলের পোকার ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন সুমী, যৌতুকের জন্য নয়।’
ইন্দুরকানি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনামুল হক বলেন, ‘গৃহবধূ মৃত্যুর ঘটনায় তার স্বামী ও শাশুড়িকে আটক করা হয়েছে। তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। মৃত্যু নিয়ে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য রয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হচ্ছে। বিষয়টা আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি।’