বরিশালের উজিরপুর উপজেলার হাজী তাহের উদ্দিন ইসলামিয়া ডিগ্রি কলেজের জমি দখল করে পাকা দোকানঘর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষ সম্পত্তি রক্ষায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। এ ছাড়া নির্মাণকাজ বন্ধে উচ্চ আদালত স্থিতাবস্থা জারি করেছেন।
১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠিত কলেজটির ১ একর ৬৯ শতাংশ জমি রয়েছে। কলেজ কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, স্থানীয় ইউসুফ মল্লিক দেওয়ানি মামলা করে কলেজের জমি দখলের চেষ্টা করেন। কলেজ কর্তৃপক্ষ এর বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করে। এখন মল্লিক পরিবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সীমানাপ্রাচীরের মধ্যে জমি দখল করে দোকান করছে।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, মূল ফটকের পাশে একটি টিনশেড ঘর ছিল। সেখানে ডিগ্রির পাঠদান চলত। হঠাৎ করে ওই জমি দখল করে পাকা দোকানঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান বলেন, ‘ওই জমিতে টিনশেড ঘরে ২০০০ সাল থেকে ডিগ্রির ক্লাস চলত। ২০২৩ সাল থেকে ইলিয়াস মল্লিক ও এখলাস মল্লিক গং ঘরটি দখলের পাঁয়তারা করেন। তখন থেকে এ জমি তাঁরা বলেন তাঁদের; কিন্তু আমরা দাবি করছি আমাদের। স্কুলের বাউন্ডারির মধ্যের জমি যদি তাঁদেরই হতো, তাহলে এত দিন আসেননি কেন?’
অধ্যক্ষ জানান, কলেজে প্রায় ৫০০ ছাত্রছাত্রী রয়েছে। প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে তিনি ১০ ডিসেম্বর হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী নির্মাণকাজ বন্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে চিঠি দিয়েছেন।
এ নিয়ে কথা হলে দখলদার এখলাস মল্লিক জানান, আদালত স্থিতাবস্থা দিলেও শীতকালীন ছুটির মধ্যে তিনি নির্মাণের বাকি কাজ সম্পন্ন করে ফেলবেন। তিনি বলেন, ‘এটা আমার বাপ-দাদার সম্পত্তি। কলেজ কর্তৃপক্ষ যদি কাগজ দেখাতে পারেন, তবে ছেড়ে দেব। এই কলেজের ভবন আমার বাবা দান করেছেন। এটা রাস্তার পাশের জমি। কলেজের সভাপতি জাকির, কাইউমসহ একটি চক্র এ জমি নিয়ে আমার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দিয়েছেন।’
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) হাসনাত জাহান খান বলেন, ‘কলেজটি পরিদর্শন করেছি। কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বর্তমানে কাজ বন্ধ রাখার জন্য বলা হয়েছে।’
যোগাযোগ করা হলে ইউএনও মো. আলী সুজা বলেন, ‘কলেজের জমিতে যে স্থাপনা করা হচ্ছে, সেখানে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে আদালতের নির্দেশে। আমরা নির্মাণকাজ বন্ধ রাখতে বলেছি। দুই পক্ষের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে জমির মালিকানা নির্ধারণ করা হবে।’