সীতাকুণ্ড পৌরসভায় রাজস্ব বৃদ্ধির ভবনই বোঝা

সবুজ শর্মা শাকিল, সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১: ৩৬
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড পৌরসভা কর্তৃপক্ষের নির্মিত ভবন অব্যবহৃত পড়ে আছে। ছবিটি সম্প্রতি তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড পৌরসভার রাজস্ব বাড়ানোর জন্য চারতলা ভবন নির্মাণ করা হয় আড়াই বছর আগে। কথা ছিল, বিশ্বব্যাংকের প্রায় পাঁচ কোটি টাকা অর্থায়নে নির্মিত ভবনটি ভাড়া দিয়ে রাজস্ব সংগ্রহ করবে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। কিন্তু রাজস্ব বৃদ্ধি দূরে থাক, উল্টো ভবনটির তদারকির কাজে প্রতি মাসে পৌরসভা কর্তৃপক্ষকে ব্যয় করতে হচ্ছে ১২ হাজার টাকা।

সেই সঙ্গে অতিরিক্ত বোঝা হয়ে পৌর কর্তৃপক্ষের ঘাড়ে চেপেছে ভবনে সংযোগ দেওয়া বিদ্যুৎ বিলের টাকা। এরই মধ্যে বিদ্যুৎ বিলের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় ভবনের সংযোগবিচ্ছিন্ন করেছে বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ। শুধু তা-ই নয়, নবনির্মিত এ ভবনের ওপরের অধিকাংশ কাচ ও গ্রিল ভেঙে পড়েছে।

নির্মাণের আড়াই বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে সীতাকুণ্ড পৌরসভার নির্মিত এই ভবন।

পৌরসভা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কমিউনিটি সেন্টার হিসেবে সর্বসাধারণের কাছে ভাড়া দেওয়ার জন্য ওই ভবনটি নির্মাণ করা হয়। পৌরসভার সাধারণ, পরিষদে এ-সংক্রান্ত একটি কমিটি এবং রেজল্যুশন করা হয়; কিন্তু সে কমিটি এখনো ভবনটি ভাড়া দিতে পারেনি।

অন্যদিকে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ভবনটি কী কারণে নির্মাণ করেছে, তা তাঁরা জানেন না। ভবনটি কখনো কমিউনিটি সেন্টার হিসেবে ভাড়া দেওয়া হয়নি।

পৌর কর্তৃপক্ষ সূত্র জানিয়েছে, মিউনিসিপ্যাল গভর্ন্যান্স অ্যান্ড সার্ভিস প্রজেক্টের (এমজিএসপি) আওতায় চারতলাবিশিষ্ট ভবনটির শুরুতে প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ৪ কোটি ৪৬ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। এরপর ৪ কোটি ৯১ লাখ ৮ হাজার টাকা। ২০১৮ সালের ১০ জুন ভবনটি নির্মাণে নিপা এন্টারপ্রাইজ নামের এক ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তি হয়। পরের বছর ১৫ মার্চ ভবনটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। তিন বছর পর নির্মাণকাজ শেষে ২০২২ সালের ২৪ মে ভবনটি হস্তান্তর করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৮ আগস্ট সারা দেশের মতো সীতাকুণ্ড পৌরসভার মেয়র বদিউল আলমকেও অপসারণ করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। একই দিন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (রাজস্ব) প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপর তা পরিবর্তন করে ২৩ সেপ্টেম্বর ইউএনওকে প্রশাসক হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে পৌরসভার কাউন্সিলরদেরও অপসারণ করা হয়।

সাবেক কাউন্সিলর আবুল কালাম আজাদ বলেন, দুই বছর আগে পুরোপুরি নির্মাণকাজ শেষ হয় ভবনটির। নির্মাণকাজ শেষে এটি বুঝিয়ে দেওয়া হয় কর্তৃপক্ষকে। কিন্তু পৌর কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তহীনতার কারণে ভবনটি আর ভাড়া দেওয়া হয়ে ওঠেনি। ফলে এটি থেকে রাজস্ব আয়ের যে লক্ষ্য ছিল, তা উল্টো লোকসানে পরিণত হয়েছে। এখন আয়ের পরিবর্তে পৌর কর্তৃপক্ষকে ভবনের পেছনে প্রতি মাসে উল্টো ব্যয় করতে হচ্ছে।

পৌরসভার প্রশাসক ও ইউএনও কে এম রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ভবনের বিষয়টি নিয়ে আমি পৌরসভার সচিবসহ পরিচালনা কমিটির সঙ্গে আলোচনা করেছি।’

আ.লীগ নেতার ফ্ল্যাট দখলনিতে ত্রিপক্ষীয় লড়াই

সীতাকুণ্ডে বিএনপির নেতাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা

শর্ত ভঙ্গ করে নিয়োগ পরীক্ষায় শিবির নেতা, ব্যাখ্যা চেয়ে কুবি প্রশাসনকে আলটিমেটাম

চট্টগ্রাম এক্সপ্রেসওয়েতে শুরু হচ্ছে টোল আদায়