হোম > সারা দেশ > চট্টগ্রাম

ভুতুড়ে নয়, জমিদারবাড়ি

মো. ইমরান হোসাইন, কর্ণফুলী (চট্টগ্রাম)

মিয়াবাড়িটিকে দেখলে এখন যে কেউ বলবে, এটা ভুতুড়ে বাড়ি।

ঝোপ-জঙ্গলের মধ্যে উঁকি দিচ্ছে ইটের যে প্রাসাদটি, তার রয়েছে ইতিহাস। কিন্তু আদতে সে ইতিহাসের কতটা জনশ্রুতি, কতটা সত্য, তা নিয়েও রয়েছে নানান কথা।

তবে অতীত ইতিহাস যা-ই বলুক না কেন, চট্টগ্রাম শহর থেকে কর্ণফুলী নদী পার হয়ে ১৫ কিলোমিটার গেলে কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নের মিয়ারহাটে পৌঁছে যাওয়া যাবে, এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। এলাকাটি এখন শিল্পনগর হিসেবে পরিচিত। এখানেই রয়েছে মিয়াবাড়ি। অতিপ্রাচীন এই বাড়িটি জমিদার মনোহর আলী খানের।

এই বাড়ির গল্প বলতে গেলে সুবেদার শায়েস্তা খানের নামটা উঠে আসে। বলা হয়ে থাকে, শায়েস্তা খান তাঁর জমিদারির ২৫ শতাংশ দেওয়ান মনোহর আলী খানকে দান করেছিলেন। সেখান থেকেই তাঁদের জমিদারি শুরু। একসময় তাঁদের জমিদারি হাতিয়া-নোয়াখালী পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। চট্টগ্রামের অধিকাংশ ছোট জমিদার ছিলেন এ পরিবারের তালুকি জমিদার। বছরের বিশেষ দিনে এই ছোট জমিদারেরা মনোহর আলী খানের কাছে খাজনা নিয়ে আসতেন। আর সে সময় এখানে বসত ভারতবর্ষের সেরা শিল্পী, বাদকদের আসর। ভোলা যায় না, এমন এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হতো।

জনশ্রুতি বলছে, এই পরগনার নাম ছিল দেয়াঙ। সেটা ছিল রাজা শ্যাম রায়ের। এখন এটি কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নের মিয়ারহাট এলাকার অংশ। দেয়াঙ পরগনার পাশেই ছিল প্রাচীন বন্দর। এ এলাকা মোগল বাহিনীর বশে ছিল না। শায়েস্তা খান তাই এখানে এসেছিলেন শত্রুদের শায়েস্তা করতে। চট্টগ্রাম বিজয়ের সময় শায়েস্তা খানের সেনাপতি ছিলেন তাঁরই ছেলে বুজুর্গ উমেদ খান। আর এই উমেদ খানের সহযোগী সেনাধ্যক্ষ ছিলেন রাজা শ্যাম রায়। তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে দেওয়ান মনোহর আলী নাম নিয়েছিলেন। এর পরের ইতিহাসের দিকে না গিয়ে আমরা চলে আসি বর্তমানে।

জমিদার মনোহর আলী খানের বংশধর সাজ্জাদ আলী খান মিটু সপরিবারে থাকেন চট্টগ্রাম শহরে। তিনি জানান, ১৬৬৫ সাল থেকে এ পরিবারের জমিদারি শুরু হয়। দীর্ঘ কয়েক শ বছর জমিদারি চলার পর জমিদারিপ্রথা বিলুপ্ত হলে কমতে থাকে জমিদার বংশীয়দের শৌর্যবীর্য। পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে পুরোনো জমিদার বাড়ি।

জমিদার মনোহর আলী খানের অধস্তন সপ্তম পুরুষ ছিলেন ফাজিল খান। তিনি ফাজিল খাঁর হাটের প্রতিষ্ঠাতা। নবম পুরুষ ছিলেন ইলিয়াছ খান। মূল সড়কের পাশে ৩০০ বছর পুরোনো যে মসজিদ রয়েছে, সেটির প্রতিষ্ঠাতা এই ইলিয়াছ খান।

জমিদার পরিবারের ১৯তম বংশধর রহমত উল্লাহ খান হেলাল। তিনি বলেন, ‘নবাব শায়েস্তা খানের আমল থেকে এ পর্যন্ত ১৯তম বংশধর জমিদারি কার্যক্রম পরিচালনা করেন। সর্বশেষ জমিদার আসাদ আলী খানের পুত্র জমিদার আনোয়ার আলী খান ও সালামত আলী খানের বংশধরের সাত পরিবার বর্তমানে এলাকায় বসাবাস করছি।’

দেয়াঙ পাহাড়ের মাটি দিয়ে বিশেষভাবে ইটগুলো তৈরি করা হয়েছিল। এর সঙ্গে চুন-সুরকির মিশেলে স্থাপনাটি নির্মাণ করা হয়। জমিদারের বংশধরেরা ষাটের দশক থেকে ভবনটিতে বসবাস করা বন্ধ করে দেন।

বাড়িটির ইতিহাস আছে। সে ইতিহাস সংরক্ষণ করতে পারলেই পর্যটকেরা এখানে এসে মনোমুগ্ধকর অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরে যেতে পারবেন।

হেডফোন কানে রেললাইনে যুবক, ট্রেনে কাটা পড়ে নিহত

ওসমান হাদি হত্যার বিচারের দাবি চবির আধিপত্যবাদবিরোধী শিক্ষক ঐক্যের

লক্ষ্মীপুরে বিএনপি নেতার ঘরে আগুন: মামলা হয়নি, নাশকতার ‘বিশ্বাসযোগ্য’ প্রমাণ মেলেনি

কর্ণফুলীতে ট্রাফিক পুলিশের ওপর হামলা, আটক ১০

রাউজানে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে ৩ বসতঘরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ

কুমিল্লায় একাধিক মামলার আসামি শামীম গ্রেপ্তার

চট্টগ্রামে ওসমান হাদির গায়েবানা জানাজা

লক্ষ্মীপুরে মাটি খুঁড়ে মিলল চট্টগ্রামে থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র, যুবক গ্রেপ্তার

মিরসরাইয়ে গাড়ির ধাক্কায় ভ্যানচালক নিহত

আনিসুল ইসলামের গ্রামের বাড়িতে হামলা-অগ্নিসংযোগ