নোয়াখালীর আদালতে মামলার সাক্ষ্য দিতে এসে যুবদলের নেতা–কর্মীদের তোপের মুখে পড়েছেন ঢাকা আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) উপপরিদর্শক (এসআই) লিটন দত্ত। তাঁকে দীর্ঘ সময় ধরে অবরুদ্ধ রাখা হয়। আজ রোববার জেলা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এসআই লিটন দত্ত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নোয়াখালীর সুধারাম মডেল থানায় কর্মরত ছিলেন। পরে অন্যত্র বদলি হওয়ার পরও তিনি আবার সুধারাম মডেল থানায় যোগদান করে। ওই থানায় কর্মরত অবস্থায় তাঁর বিরুদ্ধে বিএনপি-জামায়াতের নেতা–কর্মীদের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার লোকজনকে বিনা কারণে হয়রানি ও নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে।
শহর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল খায়ের সোহেল বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় এসআই লিটন সুধারাম মডেল থানায় কর্মরত ছিলেন। সে সময় বিএনপির নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে অনেকগুলো মিথ্যা মামলা করেন তিনি। এওজবালিয়া ইউনিয়নের একটি হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলায় নাম না থাকা সত্ত্বেও অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে দেখিয়ে তাঁদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করেন লিটন।
বিএনপির অনেক নেতা–কর্মীকে ক্রসফায়ার দেওয়ার জন্য নিয়ে গিয়ে অর্থ আদায় করে ছিলেন। লিটন দত্ত তাঁদের কাছ থেকে অর্থ নেওয়ার পরও হয়রানি বন্ধ করেননি। তাঁর ভয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেনি কেউ। দলীয় লোকজন ছাড়াও সাধারণ নারী–পুরুষদেরও হয়রানি করতেন তিনি। বাসাবাড়িতে তল্লাশির নামে লুটপাটের অভিযোগ করেন এ যুবদল নেতা।
আবুল খায়ের সোহেল আরও বলেন, ‘সোর্সের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি, তিনি ঢাকা থেকে আদালতে সাক্ষ্য দিতে আসছেন। পরে আদালত থেকে বের হলে কাদির হানিফ ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি এ এইচ বাহাদুর, শহর ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুর রহমান আনাজ, যুবদল নেতা মুরাদ, কোরবানসহ স্থানীয় লোকদের নিয়ে আমরা তাঁর গতিরোধ করি। লিটন দত্তের কাছে আমাদের অর্থ ফেরত ও মিথ্যা মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি টালবাহানা শুরু করেন।
এ সময় লোকজন ও নেতা–কর্মীরা তাঁর ওপর চওড়া হন। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ তাঁকে নিয়ে যায়। আমরা যাঁরা লিটনের হাতে অতীতে নির্যাতনের শিকার হয়েছি, লিটনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করব।’
এ বিষয়ে সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে তাঁকে থানায় নিয়ে আসি। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলার পর লিটন দত্ত তাঁর কর্মস্থলে ফিরে গেছেন।’