ফেনী প্রতিনিধি
ফেনীতে দ্বিতীয়বারের মতো বিড়াল প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। গতকাল বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বিকেলে শহরের একটি কনভেনশন হলে ফেনী অ্যানিমেল লাভার্সের উদ্যোগে ক্যাট শো সিজন-২-এর ব্যানারে এ আয়োজন করা হয়। ক্যাট শোতে দেশি-বিদেশি তিনটি জাতের ৬০টি বিড়াল প্রদর্শন করে তাদের শৌখিনতাসহ নানা বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেন প্রাণিপ্রেমীরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ছোট ছোট টেবিলে বিভিন্ন প্রজাতির বিড়ালসহ তাদের মালিকেরা বসে আছেন। প্রদর্শনী উপভোগ করতে বিভিন্ন জায়গা থেকে এসেছেন বিড়ালপ্রেমীরা। কেউ কেউ বিড়ালগুলো ছুঁয়ে দেখছেন, কেউ কোলে নিয়ে আদর করছেন। পরে বিড়ালের যেমন খুশি তেমন সাজো, উপযুক্ততা, আকার ও জাতের ওপর নির্ভর করে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান নির্ধারণ করা হয়। তাতে বিনা মূল্যে প্রাণীর ভেটেরিনারি চিকিৎসাসেবাও দেওয়া হয়।
প্রদর্শনীতে বিড়াল নিয়ে আসেন মারজানা নাবিলা নামের এক শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, বাসায় অবসর সময়ে বিড়াল নিয়ে ভালো সময় কাটে। এসবের মধ্যে থাকলে মানসিক শান্তি পাওয়া যায়। গত কয়েক দিন এ আয়োজন নিয়ে অনেক উচ্ছ্বাস ছিল। এখানে অংশগ্রহণ করে ভালো লাগছে।
ফেনী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী শ্রাবন্তী চৌধুরী বলেন, ‘প্রদর্শনীতে তিনটি বিড়াল নিয়ে এসেছি। এর মধ্যে একটি বিদেশি জাতের। বিড়াল পালনের বিষয়টি শুরুতে পরিবারের সদস্যরাও ভালোভাবে নেয়নি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এখন অনেকটা স্বাভাবিক হয়েছে।’
রুবাইরা ইসলাম নামের একজন বলেন, ‘মফস্বলে এমন আয়োজনের মধ্য দিয়ে প্রাণীদের প্রতি অহিংস্র মনোভাব তৈরি হবে। ভবিষ্যতেও এমন আয়োজন অব্যাহত রাখলে সাধারণ মানুষ এ বিষয়ে জানতে পারবে।’
বিড়াল দেখতে এসে উচ্ছ্বসিত শিশু নাজিয়া। ক্যাট শোতে একসঙ্গে এত রকমের বৈচিত্র্যময় বিড়াল দেখার সুযোগ পেয়ে সত্যিই আনন্দিত সে। আগে কখনো এমন সুন্দর বা বিভিন্ন প্রজাতির বিড়াল দেখার অভিজ্ঞতা নেই তার।
অনুষ্ঠানে এসে ফেনীর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (সদর রেঞ্জ) বাবুল চন্দ্র ভৌমিক বলেন, ক্যাট শো ভিন্নধর্মী একটি আয়োজন। এখানে প্রাণিপ্রেমীরা তাদের প্রিয় প্রাণীকে সাজিয়ে তুলে ধরেছেন, যা প্রাণীর প্রতি ভালোবাসা ও যত্নের বহিঃপ্রকাশ। এমন আয়োজনে প্রাণীর প্রতি সচেতনতা ও ভালোবাসা বাড়বে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অনুষ্ঠানের আয়োজক ও ফেনী অ্যানিমেল লাভার্সের সিইও সাইমুন ফারাবী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পশুর প্রতি নিষ্ঠুরতা বন্ধে এবং মানুষের ভালোবাসা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই ব্যতিক্রম আয়োজন। আগেও আমরা এ ধরনের একটি আয়োজন করেছিলাম। সচরাচর রাজধানী বা বিভাগীয় শহরগুলোতে এমন আয়োজন চোখে পড়লেও মফস্বলের জন্য এটি অনেক বড় প্রাপ্তি। সবার সহযোগিতা পেলে ভবিষ্যতেও বড় পরিসরে এমন আয়োজন করার ইচ্ছা আছে।’