নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামে সাত বছরের শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে লক্ষণ দাশ (৩০) নামে এক দোকান কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজের ৩ দিন পর নালার পাশে বস্তাবন্দী অবস্থায় শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই বস্তার সূত্র ধরে পুলিশ হত্যাকারীকে শনাক্ত করে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দেড়টায় নগরের কোতোয়ালি থানার জামালখান এলাকায় শ্যামল স্টোর নামে দোকান থেকে ওই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযুক্ত লক্ষণ লোহাগাড়া উপজেলার উত্তর পদুয়া গ্রামের ফেলোরাম দাশের ছেলে।
আজ শুক্রবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশ জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে লক্ষণ শিশুটিকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করার বিষয়টি পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন।
পুলিশ জানায়, গত সোমবার বিকেলে চিপস কেনার জন্য বাসা থেকে বেরিয়ে দোকানের উদ্দেশে গিয়ে নিখোঁজ হয় শিশু মারজানা হক বর্ষা (৭)। পরিবারের সদস্যরা তাঁকে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে পরদিন মঙ্গলবার কোতোয়ালি থানায় একটি জিডি করেন। পরে গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল পেয়ে কোতোয়ালি থানাধীন জামালখানে লিচু বাগান এলাকায় নালা থেকে শিশুটির বস্তাবন্দী মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে উপপুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কোতোয়ালি থানার অফিসারদের নিয়ে একাধিক চৌকস টিম গঠন করা হয়। শিশুটির মরদেহ নালায় পাওয়ার পর যখন বস্তা কাটা হয় তখন আমাদের নজরে আসে বস্তাতে টিসিবির সীল আছে। এলাকাটির বিভিন্ন দোকান ও আশপাশের রেস্তোরাঁর গোডাউনে টিসিবির সীলযুক্ত বস্তা খুঁজতে থাকি। একপর্যায়ে শ্যামল স্টোর নামে দোকানের গোডাউনে টিসিবির সীলযুক্ত বস্তা খুঁজে পাওয়া যায়। ওই দোকানে মালিক ও কোন কোন কর্মচারী কাজ করে তাঁদের বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করি। ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজও সংগ্রহ করা হয়। পরে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনায় আসামি লক্ষণ দাশকে শনাক্ত করা হয়।’
পুলিশ কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর বলেন, ‘গ্রেপ্তারের পর লক্ষণ দাশ পুলিশকে জানায় শিশুটিকে সে বিভিন্ন সময় দোকান থেকে চিপস ও চকলেট দিত। ঘটনার দিন সে শিশুটিকে ১০০ টাকার লোভ দেখিয়ে দোকানটির গোডাউনে নিয়ে যায়। সেখানে শিশুটিকে ধর্ষণ করে। পরে শিশুটির রক্তপাত দেখা দিলে তাঁকে শ্বাসরোধে হত্যা করে সে।’
পুলিশ জানায়, শিশুটিকে হত্যার পর গোডাউনে রাখা টিসিবির সীলযুক্ত প্লাস্টিকের বস্তায় মরদেহটি ঢুকিয়ে রাখা হয়। পরে গোডাউনের ডান পাশে দেওয়ালের ওপারে নালায় বস্তাটি ফেলে দেওয়া হয়। পরে আরেকটি বস্তায় পেঁয়াজের খোসার সঙ্গে শিশুটির জামা-কাপড় ঢুকিয়ে নালায় ফেলে দেওয়া হয়।