নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
কিশোর আব্দুল্লাহ (১৩) মাদ্রাসার ৬ষ্ঠ শ্রণির শিক্ষার্থী। বাবা–মা দুজনেই চট্টগ্রামে পোশাক কারখানায় কাজ করেন। সে ঝালকাঠির মঠবাড়িয়ায় নানার বাড়িতে থাকে। পরীক্ষা শেষে ছুটি কাটাতে বাবা-মার কাছে আসে। কিন্তু ছুটি কাটানোর আগেই লাশ হতে হলো এই কিশোরকে।
আজ বৃহস্পতিবার নগরীর বন্দরটিলা হামিদ আলী টেন্ডল রোড থেকে তার বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগে গতকাল বুধবার বিকেলে বন্দরটিলা আয়েশার মার গলিতে খেলতে বের হয়ে ওই কিশোর নিখোঁজ হয়।
পুলিশের ধারণা, অপহরণের পর ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে না পেয়ে তাকে খুন করেছে দুর্বৃত্তরা। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সন্দেহভাজন কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান বন্দর গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা।
বন্দর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার সামীম কবির আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ হত্যার ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত কাল সংবাদ সম্মেলনে জানানো হবে।’
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, গতকাল বুধবার সকালে বাবা-মা দুজনে কাজে যাওয়ার পর কিশোর আবদুল্লাহ খেলার জন্য বাসা থেকে বের হয়। সন্ধ্যায় তার বাসায় ফিরে এসে ছেলেকে দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন।
ওই সময় আবদুল্লাহর বাবার মোবাইলে অচেনা একটি নম্বর থেকে আবদুল্লাহর বাবাকে ফোন করে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। তাৎক্ষণিক তারা ইপিজেড থানা-পুলিশের কাছে অভিযোগ দেন। আবদুল্লাহর বাবা-মায়ের অভিযোগ পেয়ে পুলিশ রাতেই নগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়। পরে যে নম্বর থেকে টাকা চেয়ে ফোন করা হয়েছিল, সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
ইপিজেড থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জামাল উদ্দিন বলেন, ‘১৩ বছর বয়সী আবদুল্লাহ ঝালকাঠির মঠবাড়িয়া উপজেলায় নানার বাড়িতে থেকে স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় লেখাপড়া করে। ছুটিতে চট্টগ্রামে বাবা-মার কাছে এসেছিল সে। তারা বাবা ও মা দুজনেই পোশাক কারখানায় কাজ করেন।
বুধবার সকালে বাবা-মা কাজে যাওয়ার পর আবদুল্লাহ বাসা থেকে বের হয়। সন্ধ্যায় তারা বাসায় ফিরে এসে ছেলেকে দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। এর মধ্যে অচেনা একটি নম্বর থেকে আবদুল্লাহর বাবাকে ফোন করে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়।’
তিনি বলেন, ‘আবদুল্লাহর বাবা-মায়ের অভিযোগ পেয়ে ইপিজেড থানার পুলিশ রাতেই নগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়। যে নম্বর থেকে টাকা চেয়ে ফোন করা হয়েছিল, সেটি পরে বন্ধ পাওয়া যায়।’
পুলিশ পরিদর্শক জামাল উদ্দিন আরও বলেন, ‘সকালে ‘আয়েশার মা’র গলি এলাকায় দুই ভবনের মাঝে একটি সরু গলিতে লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে আবদুল্লাহর বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’