নাইক্ষ্যংছড়ি (বান্দরবান) প্রতিনিধি
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে বন্য হাতির আক্রমণে বিজিবির এক নায়েক সুবেদারের মৃত্যু হয়েছে। আজ বুধবার বিজিবির দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টায় সীমান্তের ৪৯-৪৮ পিলারের মাঝখানে ভাল্লুকখাইয়া মৌজার বামহাতির ছড়ার বটতলী এলাকায় বন্য হাতির আক্রমণের ঘটনা ঘটে।
মৃত বিজিবি সদস্যের নাম সুবেদার আবদুল মান্নান। তিনি ১১ বিজিবি অধীনস্থ ভালুক খাইয়া বিওপির ক্যাম্প কমান্ডার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তাঁর বাড়ি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে। তাঁর স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল সন্ধ্যায় নাইক্ষ্যংছড়ি ব্যাটালিয়ন ১১ বিজিবি-এর ভালুখাইয়া বিওপির কমান্ডার জেসিও নায়েব সুবেদার মো. আব্দুল মান্নানের নেতৃত্বে ১০ সদস্য বিশিষ্ট বিজিবির একটি নিয়মিত টহলদল টহলে অংশ নেন। তাঁরা বিওপি থেকে আনুমানিক ২ কিলোমিটার এবং সীমান্ত থেকে ১ কিলোমিটার দূরে বাম হাতিরছড়া নামক স্থানে যান। বিজিবি টহলদল ওইস্থানে একটি চোরাচালান বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে ৩টি গরু জব্দ করেন।
জব্দকৃত গরুসহ বিওপিতে ফেরত আসার পথে আনুমানিক রাত ৯টার দিকে হঠাৎ ৩টি বন্য হাতির আক্রমণের শিকার হন তাঁরা। এ সময় টহল কমান্ডার নায়েব সুবেদার মো. আব্দুল মান্নান টহলদলের অন্যান্য সদস্যদের নিরাপদ আশ্রয়ে পাঠাতে পারলেও নিজে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে পারেননি। পরে বন্য হাতি পায়ের নিচে পড়ে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। পরবর্তীতে বিজিবির রামু সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার ও নাইক্ষ্যংছড়ি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করেন।
হাতির হামলার পরপর বিজিবি অধিনায়কসহ কয়েক প্লাটুন বিজিবি সদস্য এবং স্থানীয় শতাধিক গ্রামবাসী তাঁকে রাত ১টা নাগাদ উদ্ধার করেছেন বলে জানান স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল আবছার ইমন বলেন, ‘ঘটনার কথা শুনেছি। তবে বিজিবি সদস্য মারা গেছেন করুণভাবে।’
নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) এ আজকের পত্রিকাকে বলেন, হাতির হামলায় তাঁর মুখের চিহ্ন বিকৃত হয়ে গেছে। কক্সবাজার সদর হাসপাতালে তাঁর ময়নাতদন্ত হয়েছে। এর পর তাঁর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করার কথা শুনেছি। এ ঘটনায় নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
নাইক্ষ্যংছড়ি থানার বারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) টানটু সাহা বলেন, বন্য হাতির আক্রমণে বিজিবি সদস্য আহতের ঘটনা সঠিক। এ ঘটনা দুঃখজনক।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সালমা ফেরদৌস বলেন, বিষয়টি জেনেছি।