চট্টগ্রামে সাত বছর আগে চার বছরের শিশুকে অপহরণের পর মুক্তিপণ দাবির ঘটনায় করা মামলায় সাখাওয়াত হোসেন (৩২) নামের এক আসামিকে যাবজ্জীবন ও তাঁর স্ত্রীকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তিন আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
আজ সোমবার চট্টগ্রামের নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনাল-৭-এর বিচারক ফেরদৌস আরা আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় দেন।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সাখাওয়াত কুমিল্লা জেলার বরুড়া উপজেলার শাকপুর গ্রামের বাসিন্দা। দণ্ডপ্রাপ্ত অন্য আসামি তাঁর স্ত্রী মোছাম্মৎ কমলা বেগম (২৬), ভোলা জেলার বাসিন্দা।
ট্রাইব্যুনালের পিপি (পাবলিক প্রসিকিউটর) অ্যাডভোকেট শফিউল মোর্শেদ চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, আদালত আসামি সাখাওয়াত হোসেনকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০-এর ৭ ও ৮-এর পৃথক দুটি ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে পৃথক সাজার রায় ঘোষণা করেন।
উভয় ধারায় আসামি সাখাওয়াতকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড; অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের পৃথক আদেশ দেওয়া হয়েছে। উভয় সাজা একসঙ্গে চলবে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়।
একই মামলার আরেক আসামি কমলা বেগমকে আইনের ৭/৩০ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড; অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মোহাম্মদ বশির আহমেদ, আনোয়ারা বেগম ও জাকির হোসেন নামের তিন আসামিকে খালাস দেওয়া হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট শফিউল মোর্শেদ চৌধুরী বলেন, রায়ের সময় আসামিরা উপস্থিত ছিলেন। রায় শেষে আদালত আসামিদের সাজা পরোয়ানার ভিত্তিতে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
২০১৮ সালে ১৩ জুন নগরের পতেঙ্গা থানাধীন চার রাস্তার মোড়ে ভাড়া বাসা থেকে মো. সোহেল (৩২) নামের এক সবজি বিক্রেতার চার বছর বয়সী মেয়ে নিখোঁজ হয়। পরে সাখাওয়াত শিশুটির পরিবারের কাছে মুক্তিপণ বাবদ ১০ হাজার টাকা দাবি করেন। ১৫ জুন শিশুটির বাবা বাদী হয়ে সাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবির অভিযোগে পতেঙ্গা থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় মামলা করার পর পুলিশ শিশুটিকে ভোলা থেকে উদ্ধারের পাশাপাশি ঘটনায় জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তার করে।