কক্সবাজার প্রতিনিধি
বেসরকারিভাবে গবেষণা করে সামুদ্রিক কোরালের কৃত্রিম প্রজননে সফলতা পেয়েছেন কক্সবাজার শহরের কলাতলী এলাকার গ্রিনহাউজ মেরিকালচারের গবেষকেরা। তিন বছরের গবেষণায় এই কৃত্রিম প্রজনন সফল হয়েছে বলে দাবি প্রতিষ্ঠানটির।
আজ সোমবার কোরালের কৃত্রিম প্রজননের সফলতা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা হয় গ্রিনহাউজ মেরিকালচার হ্যাচারির মালিক তারিকুল ইসলাম চৌধুরীর। তিনি বলেন, ‘সামুদ্রিক কোরাল প্রজননের সফলতা অত্যন্ত আনন্দের। এখন থেকে এই হ্যাচারিতে জন্ম নেওয়া কোরালের পোনা নোনা ও মিঠা পানিতে চাষ করা যাবে। এই হ্যাচারিতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী ও পরামর্শদাতাদের সমন্বিত প্রচেষ্টায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রথমবারের মতো এই সফলতা পাওয়া গেছে।’
হ্যাচারির প্রধান গবেষক মোদাব্বির আহমেদ খন্দকার বলেন, ‘গত ৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় হ্যাচারির ট্যাংকে একটি মা কোরাল প্রায় ১০ লাখ ডিম দেয় এবং সেখান থেকে প্রায় ছয় লাখ রেণু পোনা জন্ম নেয়। এখন রেণু পোনার প্রতিপালন চলছে। বড় হলে ক্রমান্বয়ে রেনু পোনা নার্সারি পুকুরে ও চাষাবাদ পুকুরে ছাড়া হবে। এই মাছ সমুদ্রের নোনা পানির খাঁচা, উপকূলের স্বল্প নোনা পানির পুকুর ও মিঠা পানির পুকুরে চাষ করা যাবে।’
কোরালের কৃত্রিম প্রজনন ছাড়াও নার্সারি ব্যবস্থাপনা, মেরিকালচার ব্যবস্থাপনা ও চাষের সময়ে গ্রিনহাউজ মেরিকালচার বিভিন্ন স্তরের মানসম্পন্ন খাদ্য প্রস্তুত করবে বলে জানান মাহমুদুল হক। তিনি বলেন, ‘এসব ছাড়াও চাষাবাদে কারিগরি বিষয়ে প্রান্তিক চাষিদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার উদ্যোগ থাকবে।’
সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদের উন্নয়নে সরকার কক্সবাজারে বিভিন্ন গবেষণা কাজ চালাচ্ছে বলে জানান জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বদরুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘বিশ্ব ব্যাংকের সহায়তায় মৎস্য অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে ‘টেকসই উপকূলীয় এবং সামুদ্রিক মৎস্য প্রকল্প’ থেকে গবেষণা সহায়তায় গ্রিনহাউজ মেরিকালচার এই উদ্যোগটি বাস্তবায়ন করছে।’
শফিকুর রহমান আরও বলেন, ‘১৮ নভেম্বরের পরে এক সপ্তাহের মধ্যে সামুদ্রিক কোরাল থেকে কৃত্রিম প্রজননের পরিকল্পনা রয়েছে। সামুদ্রিক কোরালের কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে চাষাবাদ করা গেলে চাষিরা লাভবান হবেন।’
কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা বলেন, ‘কক্সবাজার পর্যটন শহর। রোহিঙ্গাসহ প্রায় ৪০ লাখ মানুষের বসবাস। কোরাল স্থানীয়ভাবে খুবই জনপ্রিয়। সামুদ্রিক কোরাল মাছের কৃত্রিম প্রজনন খুবই ভালো উদ্যোগ। এতে কোরাল দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে পাঠানো যাবে।’