কুবি প্রতিনিধি
পরীক্ষা শেষে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থী অর্ণব সিংহ রায়কে (২৬) গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে সোপর্দ করেছে ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কেরা। আজ রোববার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে।
অর্ণব সিংহ রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের সাবেক সভাপতি এবং কুবি শাখা ছাত্রলীগের সদস্য।
এদিকে এ ঘটনাকে একপ্রকারের মব জাস্টিস হিসেবে উল্লেখ্য করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবদুল হাকিম। তিনি বলেন, ‘আমরা তার সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু যেভাবে শিক্ষার্থীরা একপ্রকার মব জাস্টিসের মতো তাকে নিয়ে গেল। সেখানে আমাদের কিছু করার ছিল না। যা হয়েছে তা অপ্রত্যাশিত।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ভিডিও দেখে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অর্ণব সিংহ রায় আজ (১২ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা দিতে আসেন। পরীক্ষা শেষে বিকেলের দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী ও সমন্বয়কেরা তাঁকে আটকের জন্য বাইরে অপেক্ষা করতে থাকেন।
টের পেয়ে অর্ণব সিংহ রায় গণিত বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের ওয়াশ রুমে অবস্থান নেন। পরবর্তী সময় প্রক্টর অফিস থেকে মারধর করতে করতে বের করে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে অবস্থানরত পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন ওই শিক্ষার্থীরা।
জানতে চাইলে মার্কেটিং বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শাহাদাত তানভীর রাফি বলেন, ‘সে ছাত্রলীগের নেতা। সে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছিল এবং বিপক্ষে গিয়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মিছিল করেছে। এ ছাড়া সে একাধিক মামলার আসামিও। তাই তাকে পুলিশের দেওয়া হয়েছে। এর আগেও কয়েকজনকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’
কোটবাড়ী পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মো. বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘সমন্বয়কদের মধ্য থেকে একজন ফোন দিয়ে আমাদের জানায় যে, একজন আসামিকে আটকে রাখা হয়েছে। পরবর্তীতে আমরা যাচাই করতে দেখলাম সে একটি হামলা মামলার এজাহারভুক্ত ১২ নম্বর আসামি। এরপর আমরা তাকে আটক করে নিয়ে আসি। বর্তমানে অভিযুক্ত ডিবি হেফাজতে আছে।’
এ ব্যাপারে জানতে কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি সাজ্জাদ করিম খানের মোবাইল ফোনে একাধিক কল দিয়ে সাড়া না পাওয়ায় তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি।