কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আউশ ধানের আবাদ কম হয়েছে। পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়া ও খরার কারণে আউশের আবাদ কম হলেও চলিত বছর ফলন ভালো হয়েছে। বাম্পার ফলন ও বাজারে ধানের দাম বেশি হওয়ায় তাঁরা বেশ খুশি কৃষকেরা।
উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৫ হাজার হেক্টর জমিতে আউশ ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় ৩ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে আউশ আবাদ হয়েছে। তবে আবাদ কম হলেও ফলন বেশি হবে বলে আশা করছেন কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তারা।
উপজেলার রামনগর গ্রামের কৃষক কামাল হোসেন বলেন, ‘সরকারি প্রণোদনা আউশ চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করেছে। উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে বীজ সহায়তা দেওয়ায় এ বছর আমাদের প্রতিবেশী অনেকেই আউশ ধান চাষ করেছে। বৃষ্টি না হলেও কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ নিয়ে সেচ পাম্পের পানিতে সময় মতো জমি লাগানো, পরিচর্যা ও রক্ষণাবেক্ষণ করায় অন্য বছরের তুলনায় ভালো ফলন পেয়েছি আমরা।’
জিরুইন গ্রামের কৃষক মনির হোসেন বলেন, এক সপ্তাহ আগে ধান কাটা শুরু হয়েছে। তেমন বৃষ্টির না হওয়ায় ভালোভাবে ধান ঘরে তুলতে পেরেছি। বাজারে ধানের দাম ভালো। অন্য ধানের চেয়ে বর্ষালী আউশ চাষে লাভ বেশি। প্রতি বিঘা আবাদে খরচ হয়েছে ৫ থেকে সাড়ে ৫ হাজার টাকা।
লাভ বেশি হওয়ায় আগামী মৌসুমে আরও বেশি জমিতে আউশ আবাদ করবেন বলে জানান দুলালপুর গ্রামের কৃষক জামাল হোসেন, কামাল হোসেন, শাহাদাত হোসেন, সাম মিয়া ও জয়নাল আবেদীন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাহবুবুল হাসান বলেন, চলিত আউশ মৌসুমে এই উপজেলায় ১ হাজার ১০০ কৃষককে প্রণোদনার ধান বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে। সরকারি প্রণোদনা পাওয়ার কারণে কৃষকেরা আউশ ধান চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। চলিত বছরে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে আউশ ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্র অনুযায়ী উপজেলার কৃষকেরা বীজতলা তৈরি করেছিল।
এই কৃষি কর্মকর্তা মো. মাহবুবুল হাসান আরও বলেন, আউশ মূলত বৃষ্টি নির্ভর। বেশির ভাগ কৃষক আউশ মৌসুমে চারা রোপণের সময় বৃষ্টি না হওয়ায় ৩ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে আউশ ধান আবাদ করেছে। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আবাদ কম হলেও ফলন বেশ ভালো হয়েছে। এ বছর ধানের ভালো হওয়ায় এবং দাম বেশি পাওয়ায় আগামীতে এ ধানের আবাদ আরও বাড়বে বলে আশা করেন।