চট্টগ্রামে দুই বছর পর জামিনে মুক্তি পেয়ে কারাগার থেকে ছাড়া পেয়েছেন হেফাজত ইসলামের নেতা হারুন ইজহার। ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরকালে দেশের বিভিন্ন স্থানে হেফাজতের তাণ্ডবের অন্যতম ‘মদদদাতা’ হিসেবে তিনি গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।
গতকাল সোমবার রাত ১০টায় চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তিনি মুক্তি পান। কারাগারের ডেপুটি জেলার মো. ইব্রাহীম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আজ মঙ্গলবার মো. ইব্রাহীম বলেন, হারুন ইজহারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় দায়ের হওয়া ২৮টি মামলা ছিল; যেগুলোর প্রতিটিতে জামিন হয়েছে। এই কারণে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
হারুন ইজহার হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। তিনি চট্টগ্রামের লালখান বাজারের জামিয়াতুল উলুম আল ইসলামিয়া মাদ্রাসার সহকারী পরিচালক। ২০২১ সালের ২৮ এপ্রিল রাতে তাঁকে চট্টগ্রামের লালখান বাজারে কওমিভিত্তিক জামিয়াতুল উলুম আল ইসলামিয়া মাদ্রাসা থেকে গ্রেপ্তার করেছিল র্যাব।
এর আগে ওই বছর মার্চে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফর ঘিরে দেশের বিভিন্ন স্থানে যে নাশকতা হয়েছে, তাতে প্রত্যক্ষভাবে মদদ দেওয়ার অভিযোগ ওঠে হারুন ইজহারের বিরুদ্ধে।
চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়, উপজেলা সদর ভূমি অফিসে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে সেদিন চারজন নিহত হন। হাটহাজারীর ঘটনায় ৩০ মার্চ রাতে পুলিশ বাদী হয়ে চারটি এবং ভূমি অফিসে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দুটি মামলা করা হয়।
এর আগে ২০০৯ সালের নভেম্বরে ওই মাদ্রাসার পেছনের পাহাড় থেকে লস্কর ই তৈয়বার সন্দেহভাজন দুই বিদেশি জঙ্গিসহ গ্রেপ্তার হয়েছিলেন হারুন।
ঢাকায় ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে হামলা পরিকল্পনায় জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল তাঁদের বিরুদ্ধে। পরে ২০১৩ সালে ওই মাদ্রাসার ছাত্রাবাসে বড় ধরনের বিস্ফোরণে দুজনের মৃত্যু হয়। পরে সেখানে অভিযান চালিয়ে তাজা গ্রেনেডসহ বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় খুলশী থানায় বিস্ফোরক ও অ্যাসিড আইনে দুটি মামলা হয়, যাতে মুফতি ইজহার ও তাঁর ছেলে হারুন ইজহারকে আসামি করা হয়।