নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
ছাত্র-জনতার গনঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকেই চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী তাঁর কার্যালয়ে আসছেন না। কোথায় আছেন তাও সুনির্দিষ্ট করে কেউ বলছেন না। কাউন্সিলরাও নিজ কার্যালয়ে যাচ্ছেন না। এতে চসিকের দৈনন্দিন কার্যক্রম চরমভাবে ব্যহত হচ্ছে। পাশাপাশি নগরবাসী নাগরিক সেবা না পেয়ে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
এদিকে মেয়রকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে চসিক কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেছেন একদল বিএনপি নেতা-কর্মী। আজ সোমবার বিকালে নগরের টাইগারপাসে অবস্থিত সিটি কর্পোরেশনের অস্থায়ী কার্যালয়ের সামনে এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়।
পরিস্থিতি বেগাতিক দেখে এ সময় চসিকের নিরাপত্তারক্ষীরা কার্যালয়ের মূল ফটক বন্ধ করে দেন। পরে ফটকের সামনেই নেতা-কর্মীরা অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন।
এর আগে নগরের লালখান বাজার থেকে ৩০-৪০ জনের একদল বিএনপি নেতা-কর্মী মিছিল নিয়ে চসিক কার্যালয়ে আসেন। কার্যালয়ের সামনে পৌঁছালে মেয়র রেজাউলের বিরুদ্ধে তাঁরা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় নেতা-কর্মীরা মেয়র রেজাউলকে নগর ভবনে দেখতে চান না বলে দাবি তুলেন।
কর্মসূচিতে থাকা চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আলিম স্বপন বলেন, ‘ভোটবিহীন অবৈধ সরকারের দোসর এই রেজাউল। তিনি নিজেও ভোট ছাড়া জনপ্রতিনিধি হয়েছেন। তাঁকে আমরা যেখানে পাব প্রতিরোধ করব। আমাদের রক্তের ওপর তাঁর এই ভবনে আসতে হবে, এর আগে না।’ সেখানে আধঘন্টা বিক্ষোভের পর নেতা-কর্মীরা ফিরে আসেন।
চসিক মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাসেম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘৫ আগস্ট পর থেকে মেয়র মহোদয় অফিস করছেন না। তবে পরিস্থতি স্বাভাবিক হলে তিনি কর্মস্থলে ফিরবেন।’
তিনি বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা অনুযায়ী চসিকের দৈনন্দিন কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অফিস করছেন। মানুষকে সেবা দেওয়া হচ্ছে। কিছু ওয়ার্ডে নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, কাউন্সিলর না থাকায়।
এর আগে, গত ৩ আগস্ট নগরের নিউমার্কেট মোড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি শেষে মিছিল নিয়ে ফেরার পথে বহদ্দারহাট মোড়ে অবস্থিত মেয়রের বাসায় হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়।
৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর অন্য নেতাদের মতো তিনিও আত্মগোপনে চলে যান। এমনকি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে ৪১টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরাও আত্মগোপনে রয়েছেন।