কক্সবাজারের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে কক্সবাজার সরকারি মহিলা কলেজ। মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস-২০২২ উপলক্ষে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।
তবে বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশিত প্রতিযোগিতার ১ নম্বর শর্ত অনুযায়ী ওই কলেজে অধ্যয়নরত কক্সবাজার জেলার সকল শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করতে পারবে না। বিজ্ঞপ্তিতে উখিয়া ও টেকনাফের শিক্ষার্থী ব্যতীত অন্যরা এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
এরই মধ্যে প্রকাশিত এই বিজ্ঞপ্তি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা শুরু হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কক্সবাজার সরকারি মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণিতে অধ্যয়নরত উখিয়া উপজেলার এক ছাত্রী বলে, ‘কলেজ থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়েছে, আমরা যারা উখিয়া-টেকনাফের শিক্ষার্থী, তারা এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারব না। কলেজে জেলার সব প্রান্ত থেকে শিক্ষার্থীরা পড়তে আসে। আমাদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়েছে।’
বিজ্ঞপ্তি প্রসঙ্গে কক্সবাজার সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, ‘প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। প্রতিষ্ঠানটির নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছি।’
কক্সবাজার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক রহুল আমিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘উখিয়া-টেকনাফে ডিএনসির আলাদা অফিস রয়েছে। আজকে আমরা চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতাও করেছি অনুরূপ নির্দেশনা অনুযায়ী উখিয়া-টেকনাফ ব্যতিরেকে।’
উখিয়ার এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক মোহাম্মদ আবদুল মান্নান বলেন, ‘এটি সম্পূর্ণ সাংবিধানিক অধিকারের লঙ্ঘন। উখিয়া-টেকনাফকে পৃথক করে আমাদের বাচ্চাদের সমতা হরণ করা হয়েছে।’
ডিএনসি এবং কলেজের দেওয়া অজুহাত কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না বলছেন মানবাধিকার কর্মীরা। তাদের দাবি, এটি স্পষ্টত বৈষম্যমূলক আচরণ। ফলে এই ধরনের আয়োজন উখিয়া-টেকনাফের শিক্ষার্থীদের প্রতি অন্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঘৃণা-বিদ্বেষ জন্মাবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যেখানে ভবিষ্যতের কর্ণধারদের সমতার শিক্ষা দেবে, সেখানে এই ধরনের আচরণ মেনে নেওয়ার মতো নয়।