জমির উদ্দিন, চট্টগ্রাম
ঘটনা শোনার পর থেকেই ফ্রেমে বাঁধানো বাবার ছবিটা বুকে জড়িয়ে আছে ইয়াশরা ফাতেমা। বাবার দেওয়া সর্বশেষ ভয়েস মেসেজ বারবার শুনছে সে। মা, নানু আর ছোট চাচার কাছ থেকে একটু পরপর বাবার খোঁজ নিচ্ছে। ইয়াশরা ভারত মহাসাগরে সোমালি জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর প্রধান কর্মকর্তা (চিফ অফিসার) আতিক উল্লাহর বড় মেয়ে।
আতিক উল্লাহর তিন মেয়ের মধ্যে ইয়াশরা বড়। মেজো মেয়ের নাম উনাইজা মেহবিন এবং ছোট মেয়ে খাদিজা আরুবিয়া। দুই বছরের আবুবিয়া নানুকে একটু পরপর প্রশ্ন করছে, ‘নানু, সবাই বাবর কথা জিজ্ঞেস করছে যে?’ নাতনির এমন প্রশ্নে নিরুত্তর তিনি। কারণ, এর কোনো জবাব তাঁর জানা নেই।
আতিক উল্লাহ খান পরিবার নিয়ে চট্টগ্রামের কোতোয়ালির নন্দনকাননের একটি বাসায় থাকতেন। আজ বুধবার সেই বাসায় গিয়ে দেখা যায়, পুরো পরিবার স্তব্ধ। গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলছেন আতিকের শ্বশুর মো. ফরিদ ও ছোট ভাই মো. আব্দুল নুর খান আসিফ।
আতিকের শ্বশুর মো. ফরিদ বলেন, ‘তিন মেয়েই আতিকের কলিজা। ইয়াশরা ফাতেমা, উনাইজা মেহবিন ও খাদিজা আরুবিয়া। কী সুন্দর নাম। সব নামই দিয়েছে আমার জামাই। আতিকের কিছু হলে বাচ্চাদের কী হবে। তাদের কে দেখবে? আমরা জামাইকে সুস্থ শরীরে ফিরে পেতে চাই।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে শাহনূর বলেন, ‘আমি ছেলেকে সুস্থ অবস্থায় ফেরত চাই। তার তিনটা ছোট ছোট মেয়ে। বউ অন্তঃসত্ত্বা। শোনার পর থেকে বউ খালি কান্না করছে। তার প্রেশার বেড়ে যাচ্ছে। তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেছে। হয়তো হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। আমার নাতনিরা একটু পরপর এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করছে। সরকারের কাছে আমার দাবি, আমার ছেলেকে দ্রুত সুস্থ অবস্থায় আমার কাছে ফিরিয়ে দিন। দেশবাসীর কাছে আমি দোয়া চাই।’
আরও পড়ুন—