কোম্পানীগঞ্জ (নোয়াখালী): বসুরহাট পৌরসভার করালিয়ায় প্রকাশ্যে গুলি ছুঁড়ছে দুই ব্যক্তি। এমন ঘটনার একটি ভিডিও ও কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। জানা গেছে এই দুজন হলেন শহীদুল্যাহ রাসেল প্রকাশ কেচ্ছা রাসেল (৩৫) ও আনোয়ার হোসেন মাসুদ প্রকাশ পিচ্চি মাসুদ (২৮)। দুজনই নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার অনুসারী ও সার্বক্ষণিক সঙ্গী।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই রাসেল দীর্ঘদিন ধরে কাদের মির্জার সঙ্গে পৌরসভা ভবনের তিন তলায় থাকছেন। ঈদের আগের দিন (১৩ই মে) তাঁরা জানতে পারেন, প্রতিপক্ষের কিছু লোক পৌরসভার কাছাকাছি রয়েছে। তখন পৌরসভা ভবন থেকে কিছু লোক বেরিয়ে তাঁদের ধাওয়া দেয়। এ সময় রাসেল ও মাসুদের হাতে পিস্তল ছিল, ছবিতে গুলি করতেও দেখা যায়।
এ ঘটনায় দৌড়ে পালানোর সময় ছাত্রলীগ নেতা নুর মোহাম্মদ রাহীম (৩০), আরিফুর রহমান রাহীম (২৮), পৌরসভা ৯ নম্বর ওয়ার্ডের করিম উদ্দিন শাকিল (২৩), কোরবান আলী রাকীব (২৪) ও রাজীব আহমেদ রিয়াদ (২৪) আহত হন। এরা সকলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
এ ঘটনায় ১৭ মে সোমবার আহত নুর মোহাম্মদ রাহীম বাদী হয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানায় কাদের মির্জার ৩৮ সহযোগীর বিরুদ্ধে মামলা করেন।
এ ভিডিও ও ছবি ভাইরাল হওয়ায় সম্প্রতি কাদের মির্জা গ্রুপ ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের বিবাদমান সংঘর্ষে গুলিতে নিহত তরুণ সাংবাদিক মুজাক্কির ও শ্রমিক নেতা আলাউদ্দিন হত্যাকাণ্ড নতুন করে আবারও আলোচনায় এসেছে।
রাসেলের বিরুদ্ধে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের বাড়িতে গুলিবর্ষণ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভায় গুলিবর্ষণ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরনবী চৌধুরীকে গুলি করে পঙ্গু করা, বাস টার্মিনালে ভাংচুর এবং সাংবাদিক মুজাক্কির ও শ্রমিক নেতা আলা উদ্দিনকে হত্যাসহ সাম্প্রতিক সময়ের অন্তত ১৫টি মামলা রয়েছে।
তবে বসুরহাটের মেয়র আবদুল কাদের মির্জা দীর্ঘদিন থেকে ফেসবুক লাইভে ঘোষণা দিয়ে আসছেন, ‘আমার কোন কর্মীর হাতে অস্ত্র দেখা গেলে সেদিন আমি হিজরত করবো।’
এই ভিডিও ও ছবির বিষয়ে মুঠোফোনে কাদের মির্জার কাছে জানতে চাইলে শহীদুল্যাহ রাসেল ও আনোয়ার হোসেন মাসুদকে নিজের অনুসারী বলে স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তির যুগে অনেক কিছুই সম্ভব। ভিডিওতে যাদেরকে দেখা গেছে তাঁরা রাসেল, মাসুদ কিনা তা স্পষ্ট নয়।’
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনি বলেন, ভিডিওর অস্ত্রধারী এ সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে বিভিন্ন স্থানে অভিযান অব্যাহত রেখেছে পুলিশ।