সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
ওমরাহ হজের কাগজপত্র জমা দিতে বাড়ি থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন নিজাম উদ্দিন সরকার (৬৫)। ঢাকায় পৌঁছার আগেই ট্রেন দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি। সঙ্গে ছিলেন ছেলের বউ ফাতেমা বেগম (২৩), নাতনি তানহা বেগম (৪) ও ১০ মাস বয়সী নাতি মুয়াস উদ্দিন। তাঁরা সামান্য আহত হলেও ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান।
গতকাল সোমবার কিশোরগঞ্জের ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনের আউটার পয়েন্টে ঢাকাগামী এগারসিন্দুর ট্রেনটিকে মালবাহী একটি ট্রেন ধাক্কা দেয়। এতে অন্তত ১৮ জনের প্রাণহানি ঘটে।
এই দীর্ঘ লাশের সারির একজন নিজাম উদ্দিন সরকার। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের বরইচারা গ্রামের বাসিন্দা।
আজ মঙ্গলবার উপজেলার বরইছাড়া ঈদগাহ মাঠে তাঁর জানাজা হয়। পরে নিজ গ্রামের কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।
গ্রামবাসী ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোমবার সকালে ওমরাহ হজের কাগজপত্র জমা এবং ছেলে বউ ফাতেমার চিকিৎসার জন্য ঢাকার উদ্দেশে বাড়ি থেকে রওনা দেন তিনি। বেলা ১১টায় কালনী ট্রেনে ঢাকায় যাওয়ার কথা ছিল। ট্রেনটি না পাওয়ায় পরে মেজ ছেলের বউ, নাতি-নাতনিসহ ৩টার দিকে এগারসিন্দুর ট্রেনে করে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন নিজাম। ভৈরব থেকে ট্রেন ছাড়ার পাঁচ মিনিটের মধ্যে দুর্ঘটনায় তিনি ঘটনাস্থলে মারা যান। তাঁর তিন ছেলে ও এক মেয়ে।
নিহতের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বড় ছেলে কাঞ্চন সরকার মৃত্যুর খবর পেয়ে সৌদি আরব থেকে সকালে বাড়িতে আসেন বাবাকে শেষবারের মতো দেখতে। বাবার লাশের পাশে দাঁড়িয়ে আহাজারি করছিলেন স্বজনেরা। ছোট ছেলে আনিস কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘বাবা ওমরাহ হজের কাগজপত্র জমা দেওয়ার জন্য সোমবার সকালে ঢাকার উদ্দেশে বাড়ি থেকে রওনা দেন। প্রথমে আমার বাসায় আসার কথা ছিল। বাবার আর হজ করা হবে না, আল্লাহ যেন বাবার হজ কবুল করেন।’