ঈদ উপহার নিতে যাওয়া সেই বৃদ্ধকে ঘুষি দেওয়ার এক দিন পর আজ রোববার তাঁকে নিজ হাতে সহায়তার চাল দিলেন নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা।
আজ সকাল ৮টায় বসুরহাট পৌরসভা চত্বরে ঈদুল আজহা উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে সেই বৃদ্ধের হাতে ১০ কেজি চাল তুলে দেন মেয়র। পাশাপাশি আরও কয়েকজন দুস্থ-দরিদ্রকে নিজ হাতে ঈদ উপহারের চাল তুলে দেন তিনি।
গত শুক্রবার (১৬ জুলাই) সকালে ঈদ উপহারের ত্রাণ বিতরণ করেন মেয়র কাদের মির্জা। সেই অনুষ্ঠানের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, এক বৃদ্ধকে একটি শাড়ি দেন মেয়র। কিন্তু তিনি সেটি পরিবর্তন করতে চাইলে তাঁকে ঘুষি মেরে সরিয়ে দেন। পরে সেই ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয় এবং পরে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়।
পরে জানা যায় ওই বৃদ্ধ বসুরহাট পৌর এলাকার বাসিন্দা এনামুল হক কালু। বিষয়টি ব্যাপক সমালোচনা হলে মেয়র অনুসারী কয়েকজনের ফেসবুক আইডি থেকে লাইভে আসেন এনামুল হক। তিনি বলেন, মেয়র তাঁকে ঘুষি মারেননি। ভিডিওতে এনামুল হক বলেন, ‘সেদিন কাপড় দেওয়ার সময় ঝামেলা করেছি দেখে মেয়র সাহেব আমাকে হাত দিয়ে সরিয়ে দিয়েছেন। আমারে মারে নাই, কিচ্ছু করে নাই। তিনি খুব ভালো মানুষ। গরিব মানুষকে তিনি সাহায্য করেন।’
আজ সকালে চাল গিয়ে এনামুল হক কালু বলেন, আজকে আবার এসেছি, মেয়র সাহেবের কাছ থেকে চাল নেওয়ার জন্য। নিজ থেকে এসেছি, ওনার বিরুদ্ধে আমার কোনো অভিযোগ নাই। উনি সব সময় আমাদের সাহায্য সহযোগিতা করেন।
শুক্রবারের সেই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর সারা দেশে সমালোচনার ঝড় উঠলে রাতে নিজের ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাস দেন মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘প্রিয় দেশবাসী, বিধিনিষেধে জনজীবন অবরুদ্ধ হওয়ার পর থেকে আমার পৌরসভার নিম্নআয়ের অসহায় মানুষদের সহযোগিতা করে আসছি। আমি শুধু কোম্পানীগঞ্জ নয়, কবিরহাট, দাগনভূঞা, সোনাগাজী, সেনবাগসহ বিভিন্ন জনপদের অসহায় মানুষদের সহযোগিতা করে আসছি। কখনো কোনো মানুষ সাহায্যের জন্য এসে আমার কাছ থেকে খালি হাতে ফিরে যায়নি।’
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জা। গত ডিসেম্বরে মেয়র নির্বাচনের আগে বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলে আলোচনায় আসেন তিনি। স্থানীয় রাজনীতির বিভিন্ন ইস্যুতে দলীয় প্রতিপক্ষের সঙ্গে তাঁর বিরোধের জেরে দুবার সংঘর্ষে দুজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। আহত হয়ে ঢাকার ট্রমা সেন্টার, পঙ্গু হাসপাতালে অনেকে এখনো চিকিৎসাধীন। এসব ঘটনায় ৪০টির বেশি মামলা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ৩১ মার্চ দল থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছিলেন কাদের মির্জা। পদত্যাগের ৪৫ দিনের মাথায় ১৬ মে তিনি দলে ফিরে আসেন।