চাঁদপুর প্রতিনিধি
চাঁদপুরের হাইমচরের মেঘনা নদীতে সারবাহী জাহাজ এমভি বাখেরাহ সাত খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার আসামি আকাশ মণ্ডল ইরফানের সাত দিনের রিমান্ড এবং আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে চাঁদপুরের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোরশেদুল আলমের আদালতে ইরফানকে হাজির করা হয়। দীর্ঘ সময় জবানবন্দি শেষে সন্ধ্যায় তাঁকে পুলিশের কঠোর নিরাপত্তায় চাঁদপুর কারাগারে পাঠানো হয়।
চাঁদপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) কুহিনুর বেগম এই তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আসামি ইরফানকে সাত দিনের রিমান্ডে তদন্তকারী কর্মকর্তা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছেন। তাঁকে আদালতে হাজির করার পর খুনের ঘটনায় দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। আমাদের আইন কর্মকর্তারা সরকারকে সহযোগিতা করছে। তবে আদালতে আসামি পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।’
এর আগে গত ২৪ ডিসেম্বর রাতে বাগেরহাটের ফকিরহাট এলাকার জগদীশ মণ্ডলের ছেলে আসামি আকাশ মণ্ডল ইরফানকে র্যাব-৬-এর সহযোগিতায় র্যাব-১১ কুমিল্লা বাগেরহাটের চিতলমারী থেকে গ্রেপ্তার করে। ওই দিনই দুপুরে আসামিকে র্যাব-১১ কুমিল্লায় নিয়ে আসে। সেখানে তাঁকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি সংবাদ সম্মেলনে জানান র্যাব-১১-এর উপ-অধিনায়ক মেজর সাকিব হোসেন।
এ ছাড়া ২৪ ডিসেম্বর রাতে এমভি আল বাখেরা জাহাজে সাত খুনের ঘটনায় হাইমচর থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন জাহাজের মালিক মাহাবুব মুর্শেদ। পরদিন সন্ধ্যায় চাঁদপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তদন্তকারী কর্মকর্তা নৌ পুলিশের পরিদর্শক মো. কালাম খান আসামির ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালতের বিচারক মুহাম্মদ ফারহান সাদিক সাত দিন মঞ্জুর করেন।
গত ২৩ ডিসেম্বর চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার মেঘনা নদীর ইশানবালা মাঝেরচর খালের মুখে নোঙর করে রাখা সারবাহী জাহাজ থেকে পাঁচজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় রক্তাক্ত অবস্থায় তিনজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পর আরও দুজনের মৃত্যু হয়।
হত্যার শিকার ব্যক্তিরা হলেন জাহাজের মাস্টার ফরিদপুর সদরের জোয়াইর গ্রামের গোলাম কিবরিয়া (৬৫), তাঁর ভাগনে লস্কর শেখ সবুজ (৩৫), সুকানি নড়াইলের লোহাগড়ার আমিনুল মুন্সী (৪০), মাগুরার মহম্মদপুরের মাজেদুল ইসলাম (১৭), একই এলাকার সজীবুল ইসলাম (২৬), ইঞ্জিনচালক নড়াইলের লোহাগড়া এলাকার সালাউদ্দিন মোল্লা (৪০) এবং মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর থানার বাবুর্চি রানা (২০)। আহত সুকানি জুয়েল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাক, কান ও গলা বিভাগে চিকিৎসাধীন।