হোম > সারা দেশ > চট্টগ্রাম

চাকরির প্রলোভনে ‘আয়নাবাজিতে’ অজির, এখন টানছেন মামলার ঘানি

সোহেল মারমা, চট্টগ্রাম 

প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রামে জোরারগঞ্জ থানার প্রতারণার মামলায় প্রকৃত আসামির বদলে অজির উদ্দিন নামের ভিন্ন ব্যক্তিকে কারাগারে পাঠানোর ঘটনা ঘটেছে। কারাগারে যাওয়া ওই ব্যক্তির দাবি, তাঁকে পরিচিত এক ব্যক্তি চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে আদালতে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছিল।

গত ১১ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের জোরারগঞ্জ থানার একটি প্রতারণা মামলায় আদালতের নির্দেশে অজির উদ্দিনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে চট্টগ্রাম কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। এর আগে আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। এ সময় জেল কর্তৃপক্ষ ওই মামলার আসামির সঙ্গে কারাগারে নিয়ে আসা আসামির নাম ও ঠিকানায় গরমিল দেখতে পেলে ১৬ ডিসেম্বর এক প্রতিবেদনে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে বিষয়টি অবহিত করে।

আজ সোমবার (২৭ জানুয়ারি) এই ঘটনায় চট্টগ্রাম প্রথম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু বক্কর সিদ্দিকের আদালতে অজির উদ্দিন ও নাজমুল হোসেন নামে পলাতক আরেক ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেন।

চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হক বাদী হয়ে করা এই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে পরস্পর যোগসাজশে ও মিথ্যা পরিচয় গোপনসহ দণ্ডবিধি ২০৫/৪৬৬/৩৪ ধারায় অভিযোগ আনেন। এর আগে দেড় মাস ধরে বন্দী অজির উদ্দিনকে চট্টগ্রাম কারাগার থেকে আদালতে তোলা হয়। এ সময় আদালত আসামি অজির উদ্দিনের জবানবন্দি গ্রহণ করেন।

মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আদালতের বেঞ্চ সহকারী সৈয়দ নুরে খোদা আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিচারক বাদী হয়ে দুজনকে আসামি করে এ মামলা করেছিলেন। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে শুনানি শেষে আসামি অজির উদ্দিনকে সি ডব্লিউ (কাস্টডি ওয়ারেন্টমূলে) জেল হাজতে প্রেরণ ও পলাতক আসামি নাজমুলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ারা জারির আদেশ দিয়েছেন। শুনানির সময় আসামি অজির উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

চট্টগ্রাম জেলা সদর কোর্টের পরিদর্শক হাবিবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এ ঘটনায় একজন আইনজীবীকেও শোকজ করা হয়েছে। ওই আইনজীবী আদালতে আসামির পক্ষে নথি উত্থাপনকারী হিসেবে ছিলেন।

জানা গেছে, ২০২৩ সালের ৭ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের জোরারগঞ্জ থানায় তিনজনকে আসামি করে একটি প্রতারণার মামলা করেন মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি। মামলার আসামিরা হলেন আক্তার হোসেন, নাজমুল হোসেন ও নবিজ উদ্দিন। আসামিদের মধ্যে নাজমুল হোসেন ও নবিজ উদ্দিন সম্পর্কে ‍দুই ভাই।

তাঁদের বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট থানার ঘাড়িয়ালডাঙ্গা এলাকায়। বাকিজনের বাড়ি গাজীপুর সদর জেলায়।

২০২৩ সালের ১৫ অক্টোবর ওই মামলায় দুই আসামির নাজমুল হোসেন ও নবিজ উদ্দিন হাইকোর্টের ছয় সপ্তাহের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পান। জামিনের মেয়াদ শেষে আত্মসমর্পণ না করায় সে বছরের ২৮ ডিসেম্বর দুই আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়।

রোববার (২৭ জানুয়ারি) বিচারক মাহমুদুল হক বাদী হয়ে করা মামলায় অভিযোগে বলা হয়, গত ১১ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে জোরারগঞ্জ থানার মামলায় আসামি নবিজ উদ্দিন স্বেচ্ছায় আদালতে হাজির হয়ে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। এ সময় আদালত শুনানি শেষে আসামির জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। জামিন আবেদনের সময় অ্যাডভোকেট টি আর খান তানিম নামের একজন আইনজীবী কর্তৃক আসামির সত্যায়িত জাতীয় পরিচয়পত্র দাখিল করা হয়।

পরে চট্টগ্রাম কারাগারে জেল সুপার এক প্রতিবেদনে আদালতকে জানান, এই মামলার আসামি নবিজ উদ্দিন ভুল নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে আত্মসমর্পণের পর হাজতে যান। কারা কর্তৃপক্ষ এনটিএমসির ডেটাবেইসে এন্ট্রি দেওয়ার সময়, কারাগারে আসা ওই আসামির নাম অজির উদ্দিন ও তাঁর বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলায় দেখতে পান। আদালতে আত্মসমর্পণের সময় অজির উদ্দিন নিজেকে নবিজ উদ্দিন বলে পরিচয় দেন।

এ সময় আদালত অজির উদ্দিনের জবানবন্দি গ্রহণ করেন। জবানবন্দিতে অজিরউদ্দিন বলেন, তিনি চাকরি পাওয়ার লোভে এই মামলার আসামি নাজমুল হোসেনের কথামতো কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছেন মর্মে উল্লেখ করেন।

আদালত এটা প্রতীয়মান হয়েছে, গত ১১ ডিসেম্বর আদালতে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে জামিনের আবেদন করেছেন। নবিজ উদ্দিন না হয়েও ওকালতনামায় ‘নবিজ’ হিসেবে স্বাক্ষর করে আদালতে ওকালতনামা দেন; যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ সময় আসামি অজির উদ্দিনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন করা হয়।

এর আগে বিষয়টি নজরে আসার পর আসামি নবিজ উদ্দিনের আইনজীবী সেলিম আনছার খান বর্তমানে কারাবন্দী অজির উদ্দিনের জামিন আবেদনের জন্য দুঃখপ্রকাশ করে ওই জামিন আবেদন প্রত্যাহার করে নেওয়ার আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন।

আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে আসামি অজির উদ্দিন উল্লেখ করেন, তিনি নারায়ণগঞ্জে রোলিং মিলে চাকরি করতেন। সেখানে তাঁর দুই হাতের বৃদ্ধাঙ্গুল কেটে গিয়েছিল। এই মামলার ২ নম্বর আসামি নাজমুল হোসেন তাঁকে একটি কাজের কথা বলে নারায়ণগঞ্জ থেকে চট্টগ্রামে নিয়ে আসেন। তাঁকে আদালতের কাঠগড়ায় একটু দাঁড়াতে বলেন। উকিলের কাজ শেষ হলে তাঁকে নিয়ে যাবে বলা হয়েছিল। পরে পুলিশ তাঁকে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে নিয়ে যায়।

অজির উদ্দিন জবানবন্দিতে বলেন, তিনি নবিজ উদ্দিন নন। আর একই এলাকার বাসিন্দা হওয়া তাঁর সঙ্গে নাজমুলের পরিচয় ছিল।

নথিতে জানা যায়, অজির উদ্দিন, নবিজ উদ্দিন ও নাজমুল কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাটের একই থানার বাসিন্দা।

ফেসবুক লাইভে ওসিকে পেটানোর হুমকি: শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদকে ধরতে পুরস্কার ঘোষণা

রাউজানে কৃষিজমি থেকে মাটি কাটার দায়ে ২ জনকে জরিমানা

হাটহাজারীতে হোটেলে পুড়ে আহত এক, ২ কোটি টাকার ক্ষতি

সীতাকুণ্ড ডিসি পার্কের ফুলমেলা জমজমাট, ২৬ দিনে আয় আড়াই কোটি টাকা

হামলা মামলায় মতলব উত্তর আ.লীগ নেতা শাহজাহান গ্রেপ্তার

কক্সবাজার সৈকতে আরও ১৪টি মৃত কচ্ছপের খোঁজ

ফেসবুক লাইভে এসে ওসিকে নগ্ন করে পেটানোর হুমকি সন্ত্রাসী সাজ্জাদের

চৌদ্দগ্রামে ১০ মামলার আসামি যুবলীগ নেতা সুমন গ্রেপ্তার

অস্ত্র-গুলিসহ উখিয়ায় ২ রোহিঙ্গা গ্রেপ্তার

ফেনীতে একই স্থানে বিএনপির দুপক্ষের কর্মসূচিতে সংঘর্ষ

সেকশন