‘হেলিকপ্টার ভাড়া করে মেয়ের বিয়ে দেওয়াটা আমার কাছে নতুন কিছু নয়। এই পর্যন্ত ১৪ থেকে ১৫ বার হেলিকপ্টার ভাড়া করে শহর থেকে গ্রামের বাড়ি গেছি। এমনকি একাধিক দেশও ভ্রমণ করেছি। মানা করার পরও পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করেছিস। তোকে আমি দেখে নেব।’ এভাবেই আজকের পত্রিকার চট্টগ্রাম ব্যুরোর নিজস্ব প্রতিবেদক সোহেল মারমাকে হুমকি দেন চাকরিচ্যুত সেই ট্রাফিক পুলিশ কনস্টেবল মো. মহিবুল্লাহ।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি আজকের পত্রিকার অনলাইনে ‘চাকরিচ্যুত ট্রাফিক কনস্টেবলের ‘৪০ লাখ টাকার ফ্ল্যাট, হেলিকপ্টার ভাড়া করে মেয়ের বিয়ে’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের জেরে এই হুমকি দেন তিনি। গতকাল ও আজকে কয়েক দফায় ফোন করে এই হুমকি দেন।
প্রতিবেদক সোহেল মারমা বলেন, ‘আজকের পত্রিকা অনলাইন সংস্করণে সংবাদ প্রকাশের জেরে মহিবুল্লাহ গত ১৯ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা ৪৯ মিনিটে একটি নম্বর থেকে আমাকে ফোন করেন। মিথ্যা মামলা দেওয়ার ভয় দেখানোসহ দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। এ সময় আমি চট্টগ্রাম অফিসে কর্মরত ছিলাম। পরে আরও একাধিকবার ফোন করলে আমি আর কল রিসিভ করিনি।’
তবে, হুমকি দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে কনস্টেবল মহিবুল্লাহ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি হুমকি দিইনি। সোহেল মারমা আমার কাছ থেকে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছে। সেই টাকা না দেওয়ায় সংবাদ পরিবেশন করে। তাঁকে ফোন দিয়ে জাস্ট এতটুকু জানতে চেয়েছি।’
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজের) সাংগঠনিক সম্পাদক মহরম হোসাইন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সংবাদ প্রকাশের জেরে এই ধরনের হুমকি সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে। অতি দ্রুত ওই কনস্টেবলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনকে অনুরোধ জানাই।’
উল্লেখ, চাকরিচ্যুত কনস্টেবল মহিবুল্লাহ বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করার অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় কনস্টেবল মহিবুল্লাহ, তাঁর ছেলে মো. ইয়াছিন আরাফাত তুষার (২৩), তাদের সহযোগী জাহিদ হোসেন (৩৯) ও রাশেদ হাসানকে (৩২) গ্রেপ্তার করে পাহাড়তলী থানা-পুলিশ। গত বছরের ১৮ জানুয়ারি ভুক্তভোগী নবী হোসেন পাহাড়তলী থানায় এই মামলা করেন। এরপর পুলিশের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।