খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি
খাগড়াছড়ির দীঘিনালার নয়মাইল গ্রাম। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৫০০ ফুট উঁচু হওয়ায় শুষ্ক মৌসুমে তীব্র হয় সুপেয় পানির সংকট। এই সংকট নিরসনে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উদ্যোগে রুরাল পাইপ ওয়াটার সাপ্লাই সিস্টেমের মাধ্যমে সুপেয় পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। এতে ওই গ্রামের ২৫০ পরিবার পাচ্ছে সুপেয় পানি।
আজ রোববার প্রকল্পের উদ্বোধন করেন খাগড়াছড়ির সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। এর মধ্য দিয়ে ৫১ বছরের অপেক্ষার অবসান হলো। রুরাল পাইপ ওয়াটার সাপ্লাই সিস্টেমের আওতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সময় লেগেছে এক বছর।
নয়মাইল এলাকার বাসিন্দা কবিতা ত্রিপুরা বলেন, ‘দীঘিনালা-খাগড়াছড়ি সড়কের পাশে আমাদের এই গ্রাম। পাহাড়ি উঁচু গ্রাম হওয়ায় এখানে পানির সংকট থাকে তীব্র। বিশেষ করে শুষ্ক মৌসুমে এক থেকে দুই কিলোমিটার দূরে ঝিরি থেকে কলসিতে পানি সংগ্রহ করতে হয়। অবশেষে আমাদের কষ্টের দিন শেষ হলো। জনস্বাস্থ্যের পক্ষ থেকে এখানে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। গ্রামের মানুষ ঘরে ঘরে পানি পাচ্ছে।’
নয়মাইল এলাকার সাবেক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য গণেশ ত্রিপুরা বলেন, ‘অনেক দিন পর হলেও আমরা সুপেয় পানি পাচ্ছি। পানির জন্য আমাদের সারা বছর কষ্ট করতে হতো। এখন থেকে তা আর করতে হবে না। পাইপলাইনের মাধ্যমে ৫০টি পয়েন্ট করা হয়েছে। প্রতিটি পয়েন্টে সারা দিনই পানি পাওয়া যাচ্ছে। সেই সব পয়েন্ট থেকে গ্রামের মানুষ পানি সংগ্রহ করছে।’
এই প্রকৌশলী আরও বলেন, ‘পাথুরে পাহাড় হওয়ায় পানির স্তর পাওয়া কষ্টসাধ্য ছিল। একটি পাইপহাউস স্থাপন করেছি। প্রায় আট কিলোমিটার এলাকায় পাইপলাইনের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। ২০ হাজার লিটার ধারণক্ষমতার জলাধার নির্মাণ করা হয়েছে। জলাধার থেকে পাইপের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করা হবে। স্থানীয় কমিটি এটি রক্ষণাবেক্ষণ করবে।’
রুরাল পাইপ ওয়াটার সাপ্লাই সিস্টেম উদ্বোধনের সময় খাগড়াছড়ির সংসদ সদস্য কুজেন্দ্রলাল ত্রিপুরা বলেন, ‘নিরাপদ সুপেয় পানির জন্য এলাকার মানুষের হাহাকার ছিল। আগে এখানে পানির জন্য কূপ করে খনন করেছিল, কিন্তু পানি পাওয়া যায়নি। মূলত পাথুরে পাহাড় হওয়ার কারণে পানির স্তর পাওয়া যেত না। তবে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর চেষ্টা করেছে এবং তারা সফল হয়েছে। অন্যান্য দুর্গম এলাকায় পানির সংকট নিরসনে প্রকল্প চলমান রয়েছে।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুপ্রু চৌধুরী, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য পার্থ ত্রিপুরা জুয়েল ও অ্যাডভোকেট আশুতোষ চাকমা, দীঘিনালা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কাশেম প্রমুখ।