রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
সকল প্রকার ছাত্ররাজনীতি বন্ধ চেয়ে আবেদন করেছে চুয়েট সাধারণ শিক্ষার্থীরা। চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) শিক্ষার্থীরা এ দাবি জানান। আজ বুধবার (১৭ জুলাই) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ভবনের সামনে একত্রিত তারা হয়ে এই আবেদন জানায়।
দেশব্যাপী কোটা আন্দোলনে দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনা ঘটেছে। সম্প্রতি চুয়েট বাসেও ছাত্রলীগ কর্তৃক হামলার শিকার হয় অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এতে নারী শিক্ষার্থীসহ আহত হয় প্রায় ১০ জন শিক্ষার্থী, যাদের অনেকেই চট্টগ্রামের এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগসহ সব ধরনের রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন নিষিদ্ধের দাবি ওঠে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র প্রতিবাদের পাশাপাশি মঙ্গলবার রাতে চুয়েটে বিক্ষোভ করেন অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এরই সূত্রধরে আজ বিকেলে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ অধিদপ্তরে আবেদনপত্র জমা দেন তাঁরা।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়টির চতুর্থ বর্ষের পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী রাকিব আল হাসান বলেন, ‘ছাত্ররাজনীতি এই ক্যাম্পাসের জন্য কখনোই মঙ্গল বয়ে আনেনি বরং সব সময় দুই পক্ষের মারামারিতে হলে এবং ক্যাম্পাসে আতঙ্ক বিরাজ করেছে। ছাত্ররাজনীতির কারণে ক্যাম্পাসে আমরা কেউ নিরাপদ মনে করি না। তাই আমরা সকল সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছাত্ররাজনীতি অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছি।’
এ বিষয়ে ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের উপপরিচালক ড. মোহাম্মদ ইসলাম মিয়া জানান, ‘আমরা ছাত্রকল্যাণ অধিদপ্তর সব সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে ছিলাম এখনো আছি। আমি স্মারকলিপি বুঝে পেয়েছি, ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালক স্যার এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা অত্যন্ত শান্তিপ্রিয়, তোমরা শান্তিপূর্ণ ও ধৈর্যের সঙ্গে অবস্থান করছ। আশা করি, তোমরা তোমাদের ধৈর্যের যথাযথ পুরস্কার পাবে।’
চুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বাসে হামলার ব্যাপারে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘উক্ত ঘটনায় আমি ব্যথিত। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলার ব্যবস্থা করা হবে। সেই সঙ্গে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের বিষয়টি ফোরামে তোলা হবে। ছাত্র রাজনীতি বন্ধের পক্ষে কিনা এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়ে তিনি একাই সিদ্ধান্ত নেওয়ার কেউ নন।’
উল্লেখ্য, (৫ মে) সরকারি প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাসহ অন্য কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করেছেন উচ্চ আদালত।
ফলে সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ মোট ৫৬ শতাংশ কোটা বহাল থাকছে। বিষয়টিকে বৈষম্য আখ্যা দিয়ে এরই প্রতিবাদে দেশজুড়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে আন্দোলনকারীদের ওপর বিভিন্ন স্থানে ছাত্রলীগ কর্তৃক হামলার ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার চুয়েট বাসে ছাত্রলীগ কর্তৃক হামলার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব প্রতিবাদসহ চুয়েটে সব ধরনের ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ করেন চুয়েট শিক্ষার্থীরা।