লংগদু (রাঙামাটি) প্রতিনিধি
৯ বছর বয়সী শিশুকে ধর্ষণের দায়ে রাঙামাটির লংগদুতে রুবেল নামে এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। আজ বুধবার রাঙামাটির নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ.ই. এম. ইসমাইল হোসেন এই রায় দেন। একই সঙ্গে দুই লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি ছিলেন অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম অভি। এ সময় আদালতের কাঠগড়ায় আসামি উপস্থিতি ছিলেন।
বিচারক রায় ঘোষণার আগে মামলার সারমর্ম তুলে ধরে বলেন, আদালতে উপস্থাপিত মৌখিক-দালিলিক সাক্ষ্য ও ফরেনসিক সাক্ষ্য দ্বারা আসামি মো. রুবেল ৯ বছর বয়সী শিশু ভিকটিমকে ধর্ষণ করার অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে।
আদালত পর্যবেক্ষণে বলেন, ধর্ষকের সঙ্গে ভিকটিমের বিবাহের সুযোগ প্রদান করা হলে সমাজে অপরাধীরা অর্থ ও প্রভাবের বিনিময়ে অপরাধ করে পার পেয়ে যাবেন বিধায় আসামির ওই যুক্তি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। এরপর বিচারক তাঁর রায় পড়ে শুনান।
রায়ে আসামি মো. রুবেলকে (বর্তমান বয়স-৩২) নারী, শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর ৯ (১) ধারার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে উক্ত অপরাধের দায়ে সশ্রম যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং অতিরিক্ত দুই লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। রায় ঘোষণার ৯০ দিনের মধ্যে জরিমানার অর্থ বিধি মোতাবেক জমাদানের নির্দেশ দেয় আদালত। জরিমানার ওই অর্থ মামলার শিশু ভিকটিম ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রাপ্ত হবেন।
এদিকে রায় ঘোষণার পরপরই আসামির স্ত্রী-স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। তাঁরা জানান, রুবেল সম্পূর্ণ নির্দোষ এবং ষড়যন্ত্র করে তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। এ সময় তৎকালীন পুলিশের ওসির বিরুদ্ধে টাকা চাওয়ার অভিযোগও জানান তাঁরা।
আসামিপক্ষের আইনজীবী আবছার আলী বলেন, ‘আমরা আদালতের এই রায়ে ক্ষুব্ধ, মেডিকেল রিপোর্টে ধর্ষণের ব্যাপারটি স্পষ্ট নয়, তারপরও আমরা বাদী-বিবাদী আদালতে আবেদন করেছিলাম, বিজ্ঞ আদালত আজ আমাদের সেই আবেদনটি অস্বীকার করেছেন। আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব। আশা করছি, সেখান থেকে আমরা ন্যায় বিচার পাব।’