স্কুল সরকারি হলেও বেতন পাচ্ছেন না শিক্ষকেরা। সংসার চালাতে দিনমজুরের কাজ করতে হচ্ছে তাঁদের। এভাবে বেতন না পেয়ে মানবেতর জীবন পার করছেন খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার তাইন্দং ইউনিয়নের দুর্গম এলাকার পোড়াবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা।
তাইন্দং ইউনিয়ন থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার ভেতরে এই বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা প্রায় পাঁচ বছর ধরে বেতন পাচ্ছেন না।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তিন ধাপে সারা দেশের ২৬ হাজার বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের আওতায় আনা হয়। ২০১৭ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি পোড়াবাড়ী বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এই সময়ে জাতীয়করণ হয় খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার তাইন্দং ইউনিয়নের দুর্গম এলাকার পোড়াবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। জাতীয়করণ ঘোষণা হওয়ার পর থেকে বেতন পাচ্ছেন না শিক্ষকেরা।
আজ মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় স্কুলে ক্লাস নিচ্ছেন শিক্ষকেরা। এ সময় তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সরকারি ঘোষণা হওয়ার আগে একটি বেসরকারি সংস্থা অর্থায়ন করত। কিন্তু সরকারি ঘোষণা হওয়ার পর থেকে তারা অর্থায়ন বন্ধ করে দেয়। এরপর থেকে নিজেদের অর্থায়নে বিদ্যালয়টি চালানো হতো। কিন্তু এখন শুধু স্কুল নয়, নিজেদের পরিবার চালাতেই হিমশিম খাচ্ছেন তাঁরা।
সহকারী শিক্ষক কণ্ঠিকুমার ত্রিপুরা বলেন, স্বজন ও পরিচিতদের কাছ থেকে মাসে মাসে ধার করে অনেক ঋণের চাপে পড়ে গেছেন। বছরের পর বছর বেতন-ভাতা না পাওয়ায় এভাবেই মানবেতর জীবন যাপন করতে হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, ২০২০ সালের ২৬ আগস্ট পোড়াবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জাতীয়করণের সব কাজ সম্পূর্ণ করা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ হয়নি। তাই এখনো শিক্ষকেরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। সরকার যদি দ্রুত গেজেট প্রকাশ করে, তাহলে শিক্ষকেরা মানবেতর জীবনযাপন থেকে মুক্তি পাবে। বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করবেন বলেও জানান তিনি।