চট্টগ্রামের বায়েজিদে গুলি করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আনিসসহ জোড়া খুনের ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে নগরের বায়েজিদ ও হাটহাজারী থানায় পৃথক দুটি হত্যা মামলা করেন নিহতের স্বজনেরা। মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নিজ নিজ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সনজয় কুমার সিনহা ও মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান।
চট্টগ্রাম নগরের বায়েজিদ থানায় আওয়ামী লীগ নেতা মো. আনিসের স্ত্রী শামিম আকতার মনি বাদী হয়ে করা মামলায় সাজ্জাদ হোসেনসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা তিন-চারজনকে আসামি করা হয়েছে। চারজনের মধ্যে অন্য আসামিরা হলেন আরমান বাচ্চু, মো. জাহাঙ্গীর ও মো. হাসান।
মামলার এজাহারে নিহত আনিসকে একজন ইট-বালু ব্যবসায়ী উল্লেখ করা হয়। তিন-চার মাস ধরে আনিসের সঙ্গে আসামি আরমান বাচ্চুর সঙ্গে ব্যবসাসংক্রান্ত বিষয়ে বিরোধ চলে আসছিল। ২৯ আগস্ট পূর্ববিরোধের জের ধরে সব আসামি মিলে আনিসকে উপর্যুপরি গুলি করে হত্যা করে।
এদিকে চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানায় পৃথক আরেকটি মামলা করেন একই ঘটনায় গুলিতে নিহত যুবলীগ কর্মী মাসুদ কায়ছারের ছোট ভাই মো. আরিফ। ওই মামলায় ছয়জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৮ থেকে ১০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
২৯ আগস্ট রাতে একটি ব্যাটারিচালিত রিকশায় নগরের বায়েজিদে অনন্যা আবাসিকের অক্সিজেন কুয়াইশ সড়ক দিয়ে বাসায় যাচ্ছিলেন চট্টগ্রাম ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আনিস (৩৮) ও যুবলীগ কর্মী মাসুদ কায়ছার।
এ সময় দুটি মোটরসাইকেলে আসা কয়েকজন যুবক তাঁদের রিকশার গতিরোধ করে গুলি ছোড়েন। এতে ঘটনাস্থলে নিহত হন আনিস। মাসুদ সেখান থেকে পালিয়ে যেতে পারলেও পরে নিজ এলাকা থেকে তাঁকে ধরে গুলি করে সন্ত্রাসীরা। স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মাসুদকে মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছিলে মো. আরিফ নামে রিকশাটির চালকও। বর্তমানে তিনি চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আধিপত্য বিস্তার, পূর্বশত্রুতা ও অবৈধ সিএনজিচালিত অটোরিকশার স্টেশনে চাঁদাবাজিসহ নানা জায়গায় দখলদারত্ব নিয়ে শিবির ক্যাডারদের পাঁচ-ছয়জনের একটি গ্রুপ দুজনকে গুলি করে হত্যা করে।
নিহত আনিস হাটহাজারীর পশ্চিম কুয়াইশ এলাকার ওসমান আলী মেম্বারের বাড়ির মৃত মো. ইসহাকের ছেলে। অন্যদিকে মাসুদ কায়ছার (৩২) একই উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের পশ্চিম কোয়াইশ (বিল্লা বাড়ি) এলাকার মৃত মো. রফিকের ছেলে।
দুজনেই স্থানীয় রাজনীতিতে হাটহাজারী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের নেতা ইউনুস গণি চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত ছিলেন।