কুবি প্রতিনিধি
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. জসিম উদ্দিনকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে তাঁর দাবি, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করেই তাঁকে এই শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মজিবুর রহমান মজুমদার স্বাক্ষরিত এক চিঠি থেকে জসিম উদ্দিনকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানোর বিষয়টি জানা যায়।
চিঠিতে বলা হয়, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ষষ্ঠ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ এবং বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের পরিপ্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে আপনাকে (মো. জসিম উদ্দিন) পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাধ্যতামূলক ছুটি (একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম, বিভাগে উপস্থিত হওয়া থেকে বিরত থাকা) প্রদান করা হলো। এ আদেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে জারি করা হলো।
এই চিঠির ব্যাপারে শিক্ষক মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আমি গতকাল রাতে মেইলে এই চিঠি পেয়েছি। এরপর আমাকে আর কিছু জানানো হয়নি। আমি কিছু জানি না।’
জসিম উদ্দিন বলেন, ‘এই ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি হতে পারত। তদন্ত কমিটি থেকে শোকজ করতে পারত। শোকজের জবাবে আমি আমার জায়গাটা বলতাম। এরপর একটা সিদ্ধান্তে আসা যাইত। কিন্তু কোনো তদন্ত কমিটি না করে আমাকে শাস্তি দিয়ে দিল। এটা তো কোনো প্রক্রিয়া হতে পারে না।’
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ৪৩-এর ৬-এ বলা আছে, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বেতনভোগী শিক্ষক বা কর্মকর্তাকে তাঁর কর্তব্যে অবহেলা, অসদাচরণ, নৈতিক স্খলন বা অদক্ষতার কারণে সংবিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে চাকরি হইতে অপসারণ বা পদচ্যুত করা অথবা অন্য কোনো প্রকার শাস্তি প্রদান করা যাইবে। তবে শর্ত থাকে যে, তাঁর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পর্কে কোনো তদন্ত কমিটি কর্তৃক তদন্ত অনুষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত এবং তাহাকে ব্যক্তিগতভাবে বা কোনো প্রতিনিধির মাধ্যমে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়া চাকরি হইতে অপসারণ বা পদচ্যুত করা যাইবে না।’
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মজিবুর রহমান মজুমদার বলেন, ‘ন্যায়বিচারের জন্য আমরা তাঁকে ফোর্স লিভে পাঠিয়েছি। অন্যান্য ঘটনার মতো এই ঘটনায়ও আমরা যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই সকল কার্যক্রম করছি।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তদন্তের স্বার্থেই তাঁকে বাধ্যতামূলক ছুটি দেওয়া হয়েছে। আমরা তদন্তের জন্য ইতিমধ্যে কমিটি করার বিষয়টি প্রসেসিং করছি। এ ছাড়া তাঁকে শোকজ করার বিষয়েও কাজ চলছে।’
উল্লেখ্য, এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের অযাচিত মন্তব্য, বডি শেমিংসহ নানা অভিযোগ উঠেছে। তিনি যেন কোনো ধরনের একাডেমিক কার্যক্রমে সম্পৃক্ত না হন তা উল্লেখ করে গত ২২ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে একটি অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।