মহম্মদপুর (মাগুরা) প্রতিনিধি
চাঁদপুরে জাহাজে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন সজীবুল ইসলাম। ছেলের মৃত্যুর খবরে অসুস্থ হয়ে পড়েন বাবা। ঘটনার দুই দিন পর মারা গেলেন তিনিও। বাবা-ছেলের মৃত্যুতে পরিবার ও এলাকায় চলছে শোকের মাতম।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান দাউদ মোল্যা (৬৫)। এদিন সন্ধ্যায় তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে নিয়ে যায়।
সজীবুলের চাচা কালু মোল্যা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসকষ্টসহ শারীরিক নানা অসুস্থতায় ভুগছিলেন তিনি। গত মঙ্গলবার ছেলে সজীবুলের মৃত্যুর খবর শোনার পর থেকে দাউদ মোল্যা কেঁদেই চলছিলেন। স্বজনেরা সান্ত্বনা দিয়েও তাঁকে বোঝাতে পারেনি। একপর্যায়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে জানাজা শেষে পলাশবাড়িয়া কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।
সজিবুলেল স্ত্রী প্রিয়া বলেন, ‘আমাদের নতুন বিয়ে হয়েছিল। আমার স্বামী আমাদের মুখে হাসি ফোটাতে চেয়েছিল। সে বলছিল জাহাজে চাকরিতে পদোন্নতি হলে বেতন বাড়বে। জাহাজে চাকরিতে গিয়ে খুন হয় সজীবুল। শেষ পর্যন্ত তার শোকে আমার শ্বশুরও মারা গেলেন। এখন ভবিষ্যৎ নিয়েই আমি দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছি। সামনে কী কবর জানি না।’
নিহতের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। স্বজনদের সমবেদনা জানাতে তাঁদের আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীরা ছুটে আসছেন বাড়িতে।
মহম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহমান জানান, জাহাজে হত্যার শিকার সজীবুলের বাবা দাউদ মোল্যার মৃত্যুর সংবাদ রাতেই জানতে পেরেছেন। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার চাঁদপুরের হাইমচর এলাকায় মাঝির চরে কার্গো জাহাজে ৭ জনকে হত্যা করা হয়। হত্যার শিকার ব্যক্তিরা হলেন মাস্টার গোলাম কিবরিয়া, গ্রিজার মো. সজিবুল ইসলাম, লস্কর মো. মাজেদুল ইসলাম, শেখ সবুজ, সালাউদ্দিন, আমিনুর মুন্সী ও বাবুর্চি রানা কাজী। এ ছাড়া আহত হয়েছেন সুকানি মো. জুয়েল। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার ঘটনায় আকাশ মন্ডল ইরফানকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।