চাঁদপুরের মতলব উত্তরে বেশ কিছুদিন আগেও ঘরে ঘরে সিলিন্ডার গ্যাসের চুলা ব্যবহার করা হতো। তবে কয়েক ধাপে সিলিন্ডারের দাম বাড়ায় আবারও লাকড়ির চুলার চাহিদা বেড়েছে। অধিকাংশ গৃহিণী হাতে বানানো চুলা ব্যবহার করছেন, ফিরে গেছেন আগের পদ্ধতিতে।
জানা যায়, ৭৫০ টাকার গ্যাসের দাম বাড়িয়ে ১ হাজার ৪৫০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায় ঠেকেছে। তাই গ্যাসের চুলার বিকল্প হিসেবে উপজেলার ঘরে ঘরে গৃহিণীরা হাতে বানাচ্ছেন লাকড়ির চুলা। পাশাপাশি অনেকে কিনছেন বিভিন্ন কোম্পানির বানানো ‘বন্ধু চুলা’। হাটেবাজারেও বিক্রি হচ্ছে লাকড়ির চুলা। প্রতিটি লাকড়ির চুলা এখন ৩৫০ থেকে ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাটির চুলা তৈরি করা ঝামেলা, তাই বাজার থেকে সিমেন্ট বালুর তৈরি চুলার বিক্রি বেড়েছে কয়েক গুণ।
মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর বাজারে সিমেন্টের চুলা বিক্রেতা টিপু সুলতান বলেন, ‘আগে সারা দিন বিভিন্ন হাট-বাজারে ঘুরে ঘুরে এক থেকে দুটি চুলা বিক্রি করতাম। এখন ১০ থেকে ১৫টি চুলা বিক্রি করতে পারছি।’
এদিকে উপজেলার আধুরভিটি গ্রামের গৃহিণী রোকেয়া বেগম বলেন, ‘এত দামের গ্যাস কিনে আমাদের পক্ষে রান্নাবান্না করা সম্ভব নয়। তাই কষ্ট করে হলেও নিজের হাতে বানানো লাকড়ির চুলায় রান্না করছি। তা ছাড়া হাতে বানানো চুলায় রান্না করতে তেমন লাকড়ির প্রয়োজন হয় না। গ্যাসের চাইতেও খরচ কম।’
উপজেলার দশানী এলাকার গৃহিণী জাহানারা বেগম বলেন, ‘বাপ-দাদার আমল থেকে মাটির চুলায় রান্নাবান্না করছি। জ্বালানি হিসেবে ছিল ঘুটে, পাটখড়ি, বাঁশের কঞ্চি, গাছের মরা ডাল, খড়কুটো আর ঝরা পাতা। পরে এল গ্যাসের চুলা। কিন্তু এখন দাম বেশি। তাই আগের লাকড়ির চুলাই ভালো।’
জীবগাঁও জেনারেল হক স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আলী হোসেন জানান, এ উপজেলায় গ্যাসলাইন নেই, এখানে এলপিজি গ্যাস দিয়ে রান্না করা হয়। গ্যাসের সিলিন্ডার কিনে অনেকে গ্যাসের চুলায় রান্না করত। কিন্তু দাম বেড়ে যাওয়ায় মানুষ ফিরে যাচ্ছে লাকড়ির চুলায়।