জমির উদ্দিন, চট্টগ্রাম
সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর ফার্স্ট অফিসারের দায়িত্বে আছেন চট্টগ্রামের কোতোয়ালির বাসিন্দা ক্যাপ্টেন মো. আতিক উল্লাহ খান। গতকাল জিম্মি হওয়ার পর সর্বশেষ গতকাল সন্ধ্যায় তার সঙ্গে মোবাইল ফোরে পরিবারের কথা হয়েছে। তখন পর্যন্ত অক্ষত অবস্থায় থাকার কথা জানিয়েছিলেন।
আজ বুধবার নন্দনকাননে তাঁদের বাসায় গিয়ে পুরো পরিবারকে উদ্বিগ্ন অবস্থায় দেখা যায়। গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলছেন আতিকের শ্বশুর মো. ফরিদ ও ছোট ভাই মো. আব্দুল নুর খান আসিফ।
আতিক উল্লাহ সর্বশেষ অপহরণের দিন প্রথম রোজার ইফতারের পরপরই একটি ভয়েস মেসেজ পাঠান। তখন জিম্মি সব নাবিকের মোবাইল ফোন জলদস্যুরা কেড়ে নিচ্ছে বলে জানান আতিক উল্লাহ।
আতিকুল্লাহর মা শাহনূর আক্তার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বউমাকে ফোন করে সে বলল, জলদস্যুরা চারদিক থেকে ঘিরে ফেলছে। অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তারা জাহাজে উঠে তাদের ঘিরে রেখেছে। তবে তাদের কোনো ক্ষতি করেনি। ২০ মিনিট পর আবার ফোন করে বলল, তাদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন কেড়ে নিচ্ছে। এখন তার মোবাইলও কেড়ে নেবে। তার সঙ্গে আর যোগাযোগ হবে না। তাদের সোমালিয়া নিয়ে যাচ্ছে। আড়াই দিন লাগবে সোমালিয়া পৌঁছাতে।’
আতিকুল্লাহদের বাড়ি চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার বরকল ইউনিয়নে। তাঁর বাবা বেঁচে নেই। দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনিই বড়। ছোট ভাই এখনো পড়ালেখা করছেন।
আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার সময় গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ভারত মহাসাগরে জলদস্যুদের কবলে পড়ে এমভি আবদুল্লাহ। এরপর জাহাজটিকে সোমালিয়ার দিকে নিয়ে যাওয়া হয়।
কেএসআরএম গ্রুপের মালিকানাধীন এসআর শিপিংয়ের জাহাজটি পুরোপুরি দস্যুদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে গতকাল মঙ্গলবার বেলা দেড়টার দিকে কোম্পানির কাছে বার্তা পাঠানো হয়। এছাড়া নাবিকদের একাধিক অডিও বার্তায় অস্ত্রসহ জলস্যুদের জাহাজ দখলের কথা জানা যায়।
গতকাল সন্ধ্যায় জাহাজটির ছিল গতি ঘণ্টায় পাঁচ কিলোমিটার। কিন্তু গতকাল রাত ১১টায় জাহাজটি ট্র্যাকিং অর্থাৎ নজরদারির বাইরে চলে যায়। জাহাজের ২৩ বাংলাদেশি নাবিকের নিরাপত্তা শঙ্কার মধ্যে পড়েছে।