জেলেদের চাল আত্মসাতের ঘটনা প্রমাণিত হওয়ায় চাঁদপুর সদরের কল্যাণপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে দুদক। পদ্মা-মেঘনা নদীতে জাটকা আহরণ থেকে বিরত জেলেদের জন্য বরাদ্দ ৬.৭২ মেট্রিক টন চাল আত্মসাতের ঘটনায় এই প্রতিবেদন দেওয়া হয়।
আজ সোমবার সকালে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সমন্বিত জেলা কার্যালয় চাঁদপুরের সহকারী পরিচালক মো. কোরবান আলী গণমাধ্যমকে এই তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন রনি পাটওয়ারীর বিরুদ্ধে প্রথমে থানায় অভিযোগ করা হয়। অভিযোগটি মামলায় রূপান্তর হলে আদালতে পাঠানো হয়। বিষয়টি দুদক সংশ্লিষ্ট হওয়ায় দুদক চাঁদপুর কার্যালয়ে পাঠানো হয়। দুদকের প্রধান কার্যালয়ের অনুমতিক্রমে চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন রনির বিরুদ্ধে ২০২২ সালের ২২ আগস্ট মামলা হয়।
কোরবান আলী আরও বলেন, ‘দায়িত্ব দেওয়া হলে আমি মামলাটি তদন্ত শুরু করি। তাতে দেখা যায়, ওই ইউনিয়নের গুদামে সংরক্ষিত জেলেদের চাল প্রথমে ৪.১ মেট্রিক টন কম পাওয়া গেলেও পরবর্তী সময়ে সব কাগজপত্র দেখে চূড়ান্তভাবে ৬.৭২ মেট্রিক টন চাল কম পাওয়া যায়। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় গত ৩০ জুন তাঁর বিরুদ্ধে জেলা জজ আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করি।’
এর আগে ২০২২ সালের ১৭ মে চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন রনি জেলা খাদ্য গুদাম থেকে জেলেদের চাল উত্তোলন করেন। পরদিন ১৮ মে ওই চাল বিতরণের জন্য গেলে উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান ও ট্যাগ অফিসার সুমন কুমার দাস গুদামে থাকা চাল প্রাথমিকভাবে ওজন করে ৪.১ মেট্রিক টন কম পান। জেলেদের জন্য বরাদ্দ চালের পরিমাণ ছিল ৫৩.৬৮ মেট্রিক টন। বিষয়টি তাৎক্ষণিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয়। পরে ইউএনও ওই চালের গুদাম সিলগালা করেন।
এ বিষয়ে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সানজিদা শাহনাজের নির্দেশে সদর উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান ঘটনার বিষয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগটি মামলায় রূপান্তর হলে পুলিশ আদালতে পাঠায়। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য দুদকে পাঠান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চাঁদপুর সদর উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঘটনার পর আদালতের নির্দেশে সিলগালা গুদাম খুলে ওই চাল জেলেদের মাঝে বিতরণ করা হয়।