বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার কুটিরশিল্প কার্যালয়ে থাকা সাতটি গাছ অনুমোদন ছাড়াই কেটে বিক্রি করেছেন তাঁতশিল্পের ট্রেনার রকিব উদ্দিন। সম্প্রতি গাছগুলো কেটে মাটি ও ময়লা–আবর্জনা ফেলে গাছের গোড়া লুকানোর চেষ্টা চালান তিনি।
রকিব উদ্দিন দাবি করেন, এসব ‘বাজে গাছ’ ১০-১৫ বছর আগে মারা গেছে। এগুলোর পাতার কারণে অফিসের এরিয়া নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল। তাই কেটে ফেলেছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, আলীকদম সদরে ৩ নম্বর ওয়ার্ড পানবাজারের বৌদ্ধবিহার রোডে কুটিরশিল্প কার্যালয়টি অবস্থিত। দীর্ঘদিন ধরে অযত্নে ফেলে রাখা অফিসটি সম্প্রতি মেরামত করা হয়েছে। বহু বছর আগে অফিসের অর্থায়নে এখানে সেগুন, গামারি, বেলজিয়াম, মেহগনি, কড়ইগাছসহ বিভিন্ন ফলের গাছের চারা রোপণ করা হয়। ২০-২৫ বছর বয়স্ক গাছগুলো এখন অনেক বড় হয়েছে। সম্প্রতি মেহগনি, বেলজিয়াম, গামারি, আমগাছসহ সাতটি গাছ কেটে গাছের গোড়াতে মাটি ও ময়লা–আবর্জনা ফেলে চিহ্ন লুকিয়ে ফেলার চেষ্টা করেন রকিব উদ্দিন। কেটে ফেলা এই সাতটি গাছের মধ্যে মেহগনি, বেলজিয়ামসহ বড় গাছ পা*চটি ও মাঝারি সাইজের দুটি গাছ আছে। এগুলোর বাজার মূল্য ৬০ হাজার টাকা।
আলীকদমের বাসিন্দা জামাল উদ্দিন বলেন, ‘রকিব উদ্দিন গাছগুলো কেটে ফেলেছেন। সরকারি গাছ কেন কেটে ফেলেছেন, তা আমি বলতে পারি না।’
নিয়ম অনুযায়ী, সরকারি কোনো অফিসের গাছ কাটতে গেলে বন বিভাগে লিখিত আবেদন করতে হয়। সেখান থেকে অনুমোদন পাওয়ার পর গাছ কাটা যায় এবং তা টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিক্রি করা হয়। কিন্তু আলীকদমের কুটিরশিল্প কার্যালয়ের গাছ কাটতে কোনো অনুমোদন নেওয়া হয়নি বলে জানান, আলীকদম তৈন রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম।
এই বিষয়ে তাঁতশিল্পের ট্রেনার রকিব উদ্দিন বলেন, ‘গাছগুলো আমি কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়ে কেটে ফেলেছি। এসব বাজে গাছ ১০-১৫ বছর আগে মারা গেছে। আর গাছের পাতার কারণে অফিসের এরিয়া নষ্ট হয়ে যাচ্ছে সে জন্য কেটে ফেলেছি।’
মেহগনি, বেলজিয়াম ও গামারিগাছ বাজে গাছ কীভাবে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা অফিসের এরিয়া নষ্ট করছে। একপর্যায়ে তিনি নিউজ না করার জন্য অনুরোধ করেন।
এ বিষয়ে বান্দরবান কুটিরশিল্পের উপব্যবস্থাপক মো. শামীম আলম বলেন, ‘এই বিষয়টি আমি জানতাম না। গত সোমবার আমি আলীকদমে ছিলাম। এই বিষয়টি জানতে পারলে আমি ব্যবস্থা নিতাম, বিষয়টা খতিয়ে দেখা হবে।’