স্বাধীনতার ৫৩ বছর পেরিয়েছে। এরই মধ্যে তাঁর সঙ্গীরা সবাই পেয়েছেন মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি। কিন্তু সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করার পরেও এত দিন খেতাব পাননি তিনি। বিস্ময়কর হলেও সত্য যে মুক্তিযুদ্ধের এত বছর পর স্বীকৃতি পেয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা নরুচ্ছমদ। গত ২৬ নভেম্বর সর্বশেষ মুক্তিযোদ্ধার গেজেটে নাম এসেছে তাঁর। তবে, তিনি এই স্বীকৃতি দেখা যেতে পারেননি, কারণ চার বছর আগেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর।
নরুচ্ছমদ কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার মাইজ কাকারা এলাকার মৃত আব্দুর রশিদের ছেলে। তিনি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। তবে মৃত্যুর পর স্বীকৃতি মিললেও খুশি নরুচ্ছমদের পুরো পরিবার। কৃতজ্ঞতা জানালেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। ধন্যবাদ দিলেন চকরিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. বশিরুল আলমকে।
মো. বশিরুল আলম বীর মুক্তিযোদ্ধা নরুচ্ছমদ সম্পর্কে বলেন, ‘তিনি (নরুচ্ছমদ) ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করেন। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরে হলেও তাঁকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দান করায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।’
মুক্তিযোদ্ধা নরুচ্ছমদের ছেলে মুহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার বাবা চার বছর আগে মারা যান। ছোটকালে বাবার মুখ থেকে মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনেছি। নিজে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়ার কাহিনি শুনেছি। তিনি বেঁচে থাকা অবস্থায় কখনো সনদের জন্য তদবির করেননি। তিনি বলতেন, মুক্তিযুদ্ধ করেছি দেশ ও মানুষের জন্য। সনদ নেওয়ার জন্য নয়।’
মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘বাবা মারা যাওয়ার পর আমরা এই বিষয়ে উদ্যোগ নিই। চকরিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. বশিরুল আলমের সহযোগিতায় বাবা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পেলেন। সত্যিকারের একজন রণাঙ্গনের সৈনিক স্বীকৃতি পাওয়ায় আমরা খুশি।’
এর আগে নরুচ্ছমদ ২০১৪ সালে অনলাইনে আবেদন করেন। তারপর ২০১৭ সালে যাচাই-বাছাই করে ৩৭৬ জনের তালিকায় ১৩ নম্বরে মুক্তিযোদ্ধার নাম আসে নরুচ্ছমদের। সর্বশেষ ২৬ নভেম্বর গেজেটে নাম এসেছে নরুচ্ছমদের।