বান্দরবান প্রতিনিধি
বান্দরবানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) দুই সদস্য নিহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার সদর উপজেলার সুয়ালক ইউপির ৬ নম্বর ওয়ার্ড শ্যারনপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
শ্যারনপাড়া এলাকা প্রধান তলুয়াং থাং বমের তথ্য অনুযায়ী নিহত ব্যক্তিরা হলেন শ্যারনপাড়া এলাকার লাল নু বম ও বেথানিপাড়া এলাকার ভান থাং পুই বম।
বান্দরবান সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জুয়েল ত্রিপুরা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা গুলিবিদ্ধ দুটি মরদেহ হাসপাতালে নিয়ে এসেছে। মরদেহগুলো ময়নাতদন্ত শেষে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।’
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সশস্ত্র কেএনএফ বিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে শ্যারনপাড়ায় অভিযান চালায় যৌথ বাহিনী। এ সময় কেএনএফ সদস্যরা যৌথ বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি চালালে আত্মরক্ষার্থে তাঁরাও পাল্টা গুলি চালান।
এতে ঘটনাস্থলেই কেএনএফের দুজন সদস্য নিহত হন। পরে সন্ধ্যা ৬টার দিকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে দুজনের লাশ বান্দরবান সদর হাসপাতাল মর্গে নিয়ে আসা হয়।
এর আগে গত ২২ এপ্রিল যৌথ বাহিনীর অভিযানে রুমা উপজেলার দুর্গম মুনলাইপাড়ায় একজন, ২৮ এপ্রিল রুমার রেমাক্রী প্রাংসা ইউনিয়নে দুজন, ৭ মে রুমার দুর্গম দার্জিলিংপাড়ায় একজন ও ১৯ মে রুমা-রোয়াংছড়ি সীমান্তবর্তী ডেবাছড়া এলাকায় তিনজন কেএনএফ সদস্য নিহত হয়। নিহত ব্যক্তিরা সবাই বম সম্প্রদায়ের পুরুষ সদস্য। এ সময় বিপুল পরিমাণে অস্ত্র, গোলাবারুদ ও বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
২ ও ৩ মে জেলার রুমা ও থানচি উপজেলায় ব্যাংক ডাকাতি, হামলা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অস্ত্র লুট ও ব্যাংক ম্যানেজার অপহরণের ঘটনায় ৯টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে থানচিতে চারটি ও রুমায় পাঁচটি মামলায় ৮৬ জন কেএনএফ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। এদের মধ্যে ২৫ জন নারীও রয়েছে।
পার্বত্য পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন:
এদিকে বান্দরবান পার্বত্য এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ। আজ বৃহস্পতিবার শহরের একটি রেস্টুরেন্টে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নাগরিক পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মো. মজিবর রহমান।
মজিবর রহমান বলেন, কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টসহ সন্ত্রাসীদের কার্যকলাপের কারণে পার্বত্য এলাকার বাঙালিদের পাশাপাশি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জনসাধারণ।
এ সময় তিনি সন্ত্রাসীদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না উল্লেখ করে অবিলম্বে যৌথ বাহিনীর অভিযান আরও জোরদার করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান।
এ সময় পার্বত্য নাগরিক পরিষদের বান্দরবান জেলার সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন, সহসভাপতি আবুল কালাম আজাদ, এরশাদ চৌধুরী, লামা উপজেলা সভাপতি কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিনসহ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।