চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার ৫ নম্বর বক্সগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুর রশিদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আদালতে মামলা করেছেন তাঁরই গৃহকর্মী। আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে নাঙ্গলকোট থানাকে মামলাটি এজাহারভুক্ত করার নির্দেশ দিলে থানা মামলা এজাহারভুক্ত করেছে।
আবদুর রশিদ ওই ইউনিয়নের মদনপুর গ্রামের মৃত মমতাজ মিয়ার পুত্র। আজ বুধবার সকালে আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেবাশীষ চৌধুরী।
মামলায় ওই গৃহকর্মী উল্লেখ করেন, তিনি একজন স্বামী পরিত্যক্তা। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে চেয়ারম্যানের বাড়িতে গৃহকর্মী হিসেবে যোগদান করেন। পরিবারের অনুপস্থিতিতে বিভিন্ন সময়ে চেয়ারম্যান তাঁকে ভয়ভীতি দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে তিনি গর্ভবতী হয়ে পড়লে চেয়ারম্যান বিষয়টি বাইরে প্রকাশ না করার জন্য হুমকি দেন এবং মোটা অঙ্কের টাকার প্রলোভন দেখান।
একপর্যায়ে গত ২৩ অক্টোবর তিনি এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। সন্তানের পিতৃত্ব পরিচয়ের জন্য চেয়ারম্যানের কাছে গেলে তাঁকে হুমকি দিয়ে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন। তিনি ৪ নভেম্বর কুমিল্লার নারী ও শিশু নির্যাতন আদালতে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে একটি ধর্ষণ মামলা করেন। আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে মামলাটি থানায় এজাহারভুক্ত করে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে নাঙ্গলকোট থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।
এ বিষয়ে বাদী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি চেয়ারম্যানের বাড়িতে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে কাজে যোগদান করি। তিনি আমাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। একপর্যায়ে আমি গর্ভবতী হয়ে পড়লে চেয়ারম্যানকে বিষয়টি জানাই। তখন তিনি আমাকে হুমকি দিয়ে তাঁর (চেয়ারম্যান) নাম প্রকাশ করতে নিষেধ করেন। বাইরের অন্য কারও নাম বলতে বলে। চেয়ারম্যানের ধর্ষণের কারণে আমি গর্ভবতী হয়ে ২৩ অক্টোবর এক পুত্র সন্তানের জন্ম দিই। আমি আমার সন্তানের পিতৃত্ব দাবি করলে চেয়ারম্যান ও তাঁর লোকজন আমাকে ও আমার সদ্য ভূমিষ্ঠ সন্তানকে প্রাণনাশসহ নানা ধরনের হুমকি দেয়। বর্তমানে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’
এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রশিদ বুধবার সকালে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওই গৃহকর্মীকে একজন স্বামী পরিত্যক্তা। আমি তাঁকে দয়া করে আমার বাড়িতে গৃহকর্মী হিসেবে নিয়োগ করি। আমার প্রতিপক্ষের কুপরামর্শে আমাকে হেয়-প্রতিপন্ন করতে আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলেছে। বাদী একজন নষ্ট মহিলা। আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা।’
নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেবাশীষ বুধবার সকালে বলেন, ‘বক্সগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রশিদের বিরুদ্ধে ৪ নভেম্বর কুমিল্লার নারী ও শিশু নির্যাতন আদালতে ধর্ষণ মামলা করেছে। আদালতের নির্দেশে থানায় মামলাটি থানায় এজাহারভুক্ত করা হয়েছে। অভিযুক্ত চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের একাধিক টিম মাঠে রয়েছে।’