গত বছরের ২৭ নভেম্বর জাহাজে ওঠেন। এর আগের দিন ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার একই গ্রামের নারীর সঙ্গে কাবিন সম্পন্ন হয় নাবিক মো. সাজ্জাদ (২৮) হোসেনের। জাহাজ থেকে ফিরে আসার পর অনুষ্ঠান করে বউকে ঘরে তুলে আনার কথা রয়েছে। কিন্তু জলদস্যুদের হাতে এমভি আবদুল্লাহর জিম্মির খবরে দুশ্চিন্তা ভর করছে তাঁর পরিবার ও আত্মীয়স্বজনদের মাঝে।
সাজ্জাদ হোসেন চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বৈরাগ ইউনিয়নের উত্তর বন্দর ২ নম্বর ওয়ার্ডের মো. তাজু মিয়ার ছেলে। গত মঙ্গলবার দুপুরেই কবির গ্রুপের এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটি জলদস্যুদের কবলে পড়ে। এ সময় সাজ্জাদ হোসেন মোবাইল ফোনে বিষয়টি জানিয়েছিলেন তাঁর ভাবিকে। ফোনের ওপাশ থেকে ভাঙা কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আমাদের জলদস্যুরা ঘিরে ফেলেছে। গোলাগুলিও করছে। দোয়া করিও।’
এ কথা বলেই ফোন কেটে দেন সাজ্জাদ হোসেন। তবে আজ শুক্রবার পর্যন্ত সাজ্জাদের কোনো বার্তা না আসায় আছেন চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন স্বজনেরা। ইতিমধ্যে জাহাজের মালিকদের পক্ষ যত দ্রুত সম্ভব তাঁদের দেশে ফিরিয়ে আনার জোর চেষ্টা করছেন বলে স্বজনদের আশ্বাস দিয়েছেন।
পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে সাজ্জাদ তৃতীয়। জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে আত্মীয়স্বজন ছুটে যাচ্ছেন তাঁর বাড়িতে। জাহাজে ওঠার আগের দিন একই এলাকার এক নারীর সঙ্গে কাবিন সম্পন্ন হয়। ফিরে এসে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বউকে ঘরে আনার কথা ছিল বলে জানিয়েছেন সাজ্জাদের বড় ভাই মোশাররফ মীর।
সাজ্জাদের মা সমশাদ ভেজা চোখে বলেন, ‘আমার ছেলের সঙ্গে ঠিকভাবে কথাও বলতে পারলাম না। সে শুধু দোয়া করতে বলেছে। সরকারের কাছে আমার আকুল আবেদন, আমার ছেলেসহ জিম্মি হওয়া সবাইকে যত দ্রুত সম্ভব দেশে ফিরিয়ে আনা হোক। সরকার এবং শিপের মালিকসহ সবাই মিলেমিশে আমাদের বাচ্চাদের দ্রুত ফিরিয়ে আনার দাবি জানাচ্ছি।’
আরও পড়ুন:
টাকা দিলে ছেড়ে দিবে, না হলে একে একে মেরে ফেলবে, নাবিকের অডিও বার্তা
ওদের সবার হাতে অস্ত্র আছে, জিম্মি জাহাজ থেকে নাবিকের অডিও বার্তা
আরব মহাসাগরে জলদস্যুর কবলে বাংলাদেশি জাহাজ, ২৩ নাবিক জিম্মি
সোমালি জলদস্যুদের কবলে পড়া বাংলাদেশি জাহাজ উদ্ধার অভিযানে যেতে পারে ভারতের নৌবাহিনী: নিরাপত্তা বিশ্লেষক
জলদস্যুরা আমাদের ঘিরে রেখেছে, তবে কোনো ক্ষতি করেনি: এমভি আবদুল্লাহর চিফ অফিসার
জলদস্যুর কবলে পড়া বাংলাদেশি জাহাজ ট্র্যাকিংয়ের বাইরে, ২৩ নাবিকের নিরাপত্তার শঙ্কা