কক্সবাজার প্রতিনিধি
চাঁদা না দেওয়ায় কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরে কর্মরত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল বুধবার রাতে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে।
হামলার সময় দুর্বৃত্তরা ঠিকাদারের পাহারাদারদের মারধর করে বেঁধে রেখে তিনটি খননযন্ত্র ও মাটি পরিবহনে ব্যবহৃত পাঁচটি ট্রাক্টরে আগুন ধরিয়ে দেয়। ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ শেষে চার হাজার জিওব্যাগ লুট করে নিয়ে যায় তারা।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে হামলা হওয়ার তথ্য আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেন স্থানীয় ধলঘাটা ইউনিয়নের (ইউপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আতাহার ইকবাল। তিনি বলেন, হামলার ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে কাজ করছে পুলিশ।
মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর সূত্রে জানা গেছে, দুই মাস আগে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর কর্তৃপক্ষের একটি অফিস ও একটি টাওয়ার নির্মাণের কাজ পায় তাজ এন্টারপ্রাইজ ও জাহানারা ট্রেডার্স নামের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
মেসার্স তাজ এন্টারপ্রাইজের মালিক হাজি আব্বাস উদ্দিন বলেন, ‘কার্যাদেশ পেয়ে গত বছর থেকেই তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের পাশে জমির মানোন্নয়নে কাজ করেছি। দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য স্থানীয় কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সহযোগী ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু সম্প্রতি বেশ কয়েকজন বিভিন্ন পরিচয়ে ফোন করে আমাদের কাছে কাজের ভাগ চেয়ে আসছিলেন। একপর্যায়ে চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে প্রকল্পের কাজ বন্ধ করে দেওয়ারও হুমকি দেওয়া হয়।’
হাজি আব্বাস উদ্দিন আরও বলেন, গতকাল রাত ৩টার দিকে ৫০-৬০ জনের সশস্ত্র একটি দল এসে নিরাপত্তাকর্মীদের মারধর করে চারটি ট্রাক্টর ও তিনটি এক্সকাভেটর (খননযন্ত্র) জ্বালিয়ে দেয়। এ সময় ৪ হাজার জিও ব্যাগসহ ছোটখাটো বিভিন্ন যন্ত্রাংশ লুট করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক সাইফুল ইসলাম জানান, হামলার বিষয়টি তাঁরা জেনেছেন। করণীয় ঠিক করতে চট্টগ্রাম বন্দরের একটি দল মাতারবাড়ীতে পাঠানো হচ্ছে। তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কায়সার হামিদ জানান, পুলিশ ও নৌবাহিনী ইতিমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। প্রাথমিকভাবে হামলার ঘটনায় স্থানীয় দুই সন্ত্রাসীকে নেতৃত্ব দেওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু হয়েছে।