নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামে শিশুকে যৌন নিপীড়নের পৃথক মামলায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষসহ দুজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে আদালত প্রত্যেককে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন।
আজ মঙ্গলবার জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭-এর বিচারক ফেরদৌস আরা পৃথক রায়ে এ আদেশ দেন।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী কফিল উদ্দিন তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন মাকসুদুর রহমান (২৮) ও জোবায়ের হোসেন (২৭)। এর মধ্যে মাকসুদ কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম থানার দেওঘর এলাকার বাসিন্দা। আর জোবায়েরের বাড়ি নোয়াখালীর চরজব্বার থানার পূর্ব চরভাটা এলাকায়।
রায় ঘোষণার সময় আসামি মাকসুদ পলাতক ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। অপর আসামি জোবায়ের আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায়ের পর তাঁকে সাজামূলে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মামলা দুটির নথি পর্যালোচনায় জানা গেছে, ২০২০ সালের ১৯ অক্টোবর সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরীর উত্তর পতেঙ্গা এলাকায় পাঁচ বছর বয়সী ভিকটিম শিশু তার বড় ভাইয়ের সঙ্গে বাড়ির সামনে মোবাইলে গেম খেলছিল। আসামি মাকসুদ ওই এলাকার জামিয়াতুল মদিনা মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ছিলেন। ভিকটিম শিশু ওই মাদ্রাসার শিক্ষার্থী।
সেদিন মাকসুদ ওই শিশুকে তার বড় ভাইয়ের সামনে থেকে ডেকে মাদ্রাসায় নিয়ে যান। এরপর মাদ্রাসায় নিজ রুমে নিয়ে তাকে যৌন নিপীড়ন করেন। এ ঘটনায় ভিকটিমের বাবা মাকসুদের বিরুদ্ধে পতেঙ্গা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।
তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ২৭ জুন আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। ২০২২ সালের ২ মার্চ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। ছয়জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নিয়ে আদালত এ রায় দেন। নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় মাদ্রাসার আরেক শিক্ষককে খালাস দিয়েছেন আদালত।
অন্যদিকে ২০১৯ সালের ৬ জুলাই নগরীর পাঁচলাইশ থানার পূর্ব নাসিরাবাদ এলাকায় ১৩ বছর বয়সী এক শিশুকে যৌন নিপীড়ন করেন আসামি জোবায়ের। তাঁরা দুজনই ওই এলাকার একটি দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। এ ঘটনায় ওই শিশুর মা পাঁচলাইশ থানায় জোবায়েরের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। পুলিশ মামলার তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করলে ২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারি আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। সাতজন সাক্ষীর সাক্ষ্য নিয়ে আদালত এ রায় দেন।