রাতভর টানা বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। হাঁটু থেকে কোমরপানিতে তলিয়ে গেছে সড়ক; বাসাবাড়ি-দোকানপাটে ঢুকে পড়েছে পানি। নগরীর প্রায় এক-তৃতীয়াংশ নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে বলে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) কর্মকর্তারা জানান।
দুই দিন ধরে থেমে থেমে হালকা বৃষ্টিপাতের পর চট্টগ্রামে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতভর বৃষ্টি হয়। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত মাঝারি ধরনের ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত ছিল। হালকা বৃষ্টিপাত দুপুর গড়ানোর পরও অব্যাহত ছিল।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় মাঝারি থেকে ভারী ধরনের বৃষ্টিপাত অব্যাহত আছে। আজ শুক্রবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ৪২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। মাঝারি থেকে ভারী ধরনের বৃষ্টিপাত আরও দুই-তিন দিন অব্যাহত থাকতে পারে।
স্থানীয়রা জানান, ড্রেনেজ-ব্যবস্থা অচল থাকায় পানি সরতে না পেরে অনেক ঘর ও দোকানপাটের ভেতরে পানি ঢুকে গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চকবাজার, কাপাসগোলা, বাদুরতলা, শুলকবহর, বহদ্দারহাট, ডিসি রোড, আগ্রাবাদ, সিডিএ আবাসিক এলাকা, হালিশহর, শান্তিবাগ আবাসিক, চান্দগাঁও, বাকলিয়া, চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ, ছোটপুল, গোসাইলডাঙ্গাসহ নগরের অধিকাংশ নিচু এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। বৃষ্টির সঙ্গে ড্রেনের পানি বিভিন্ন এলাকার বাসাবাড়িতেও ঢুকে পড়েছে।
কাপাসগোলা এলাকার বাসিন্দা আবুল কাশেম বলেন, গতকাল রাত থেকে তাঁর ঘর হাঁটুপানিতে ডুবে আছে। জিনিসপত্র সব নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পানি না সরায় ঘরের পানি বাইরে বের করা যাচ্ছে না।
আজ শুক্রবার বেলা আড়াইটায় সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বেশির ভাগ এলাকা পানিতে তলিয়ে আছে। চট্টগ্রামে চলমান জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পে নগরীর ৫৭টি খালের মধ্যে ৩৬টির কাজ চলছে। বাকি ২১টি খালে পানি যাওয়ার পথ নেই। এসব খাল ও বিভিন্ন পয়েন্টের ব্রিজ, কালভার্টে বিদ্যুৎ, ওয়াসা ও গ্যাসের লাইনে ময়লা জমে পানি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ উজ্জ্বল কান্তি পাল আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম ও তিন পার্বত্য জেলায় ভারী বর্ষণের সতর্কবাণী দেওয়া হয়েছে। এ সময় ভূমিধসের আশঙ্কা আছে। এ ছাড়া সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা এবং নদীবন্দরগুলোকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।