চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে জাহাজভাঙা কারখানায় স্ক্র্যাপ জাহাজের পাম্প রুমে কাটিং কাজ করার সময় বিস্ফোরণে অগ্নিদগ্ধ ১২ জন শ্রমিকের মধ্যে সাতজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (চমেক) দায়িত্বরত চিকিৎসক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আজ শনিবার দুপুরে সোনাইছড়ি ইউনিয়নের শীতলপুর তেঁতুলতলা এলাকার সাগর উপকূলে অবস্থিত শওকত আলী চৌধুরী মালিকানাধীন এসএন করপোরেশন নামের জাহাজভাঙা কারখানায় এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
বিস্ফোরণে অগ্নিদগ্ধ শ্রমিকেরা হলেন জাহাঙ্গীর আলম (৪৮), আহমেদ উল্লাহ (৩৮), আবুল কাশেম (৩৯), সাগর (২০), আল আমিন (২৩), ইসমাইল (২১), হাবিব (৩৬), আবুল বাসেদ (২৩), আনোয়ার (৫০), রফিকুল (৩০), রফিক (২৩) ও সাইফুল (৩০)।
কারখানা শ্রমিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুপুরে ওই জাহাজভাঙা কারখানায় স্ক্র্যাপ জাহাজের কাটিং কাজ করছিলেন শ্রমিকেরা। জাহাজটির পাম্প রুমের ভেতরে কাটিং কাজ করার সময় হঠাৎ সেখানে থাকা একটি ট্যাংকে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণে আগুন ধরে যাওয়ায় কারখানার আশপাশ কেঁপে ওঠে। এ সময় পাম্প রুমের ভেতরে জাহাজ কাটার কাজ করা ১২ শ্রমিক অগ্নিদগ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। দুর্ঘটনা পর তাঁদের উদ্ধার করে চমেকে পাঠানো হয়।
কারখানার দায়িত্বরত কর্মকর্তা মো. শওকত আজাদ জানান, স্ক্র্যাপ জাহাজটি কাটার কাজ একেবারে শেষ পর্যায়ে ছিল। দুপুরে জাহাজের শেষপ্রান্তে থাকা পাম্প রুমের কাটিং কাজ করছিলেন শ্রমিকেরা। এই সময় হঠাৎই পাম্পের ভেতরে থাকা ট্যাংকে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ১২ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দিন বলেন, কারখানায় বিস্ফোরণে অগ্নিদগ্ধ ১২ শ্রমিককে হাসপাতালের ৩৬ নম্বর বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তির রোগীদের মধ্যে সাতজনের অবস্থা সংকটাপন্ন। তাঁদের শরীরের ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ দগ্ধ হয়ে গেছে।
বিস্ফোরণের বিষয়টি নিশ্চিত করে কুমিরা ফায়ার স্টেশনের জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা মামুন বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে তাঁদের একটি ইউনিটের পাশাপাশি আগ্রাবাদের একটি ইউনিট যৌথভাবে কাজ করছে। দুপুর ১২টা থেকে প্রায় চার ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছেন তাঁরা।
সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে জানান, ‘জাহাজভাঙা কারখানায় স্ক্র্যাপ জাহাজের পাম্প রুমের ভেতরে কাটিং কাজের সময় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে ১২ শ্রমিক অগ্নিদগ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন। তাঁরা বর্তমানে চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বিস্ফোরণের খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’