ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাঞ্ছারামপুর উপজেলার আলোচিত নিহত ছাত্রদল নেতার নয়নের বাড়িতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। অভিযোগ উঠেছে নয়নের পরিবারের খোঁজ খবর নিতে গিয়ে তাঁর বাড়ির সামনে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের দ্বারা হামলার শিকার হয়েছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। এতে প্রায় ৪৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
আজ শনিবার (৩ ডিসেম্বর) সোনারামপুর ইউনিয়নের চরশিবপুর গ্রামে নয়নের বাড়ির সামনে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শনিবার স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা নিহত নয়নের পরিবারের খোঁজখবর নিতে যান। খোঁজ খবর নিয়ে ফেরার পথে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বাধার মুখে পড়েন তাঁরা। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এতে সোনারামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানসহ উভয় পক্ষের প্রায় ৪৫ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে নারী, পুরুষ ও শিশু রয়েছে।
আহতরা হলেন, চরশিবপুরে গ্রামের মূনহাজ মাস্টারের মো. মনির হোসেন (৫৩), একই গ্রামে মো. জয়লান আবদীন (৪৫), ইছাপুর গ্রামের আদর্শ মিয়ার ছেলে আনোয়ার হোসেন (৪০), দোলারামপুর গ্রামে আমিন হোসেন (২৭), শান্তিপুর হোসেন মিয়ার ছেলে ফজর আলী (২৩), একই গ্রামের জাহিদুল হাসান (২২) চরশিবপুরে গ্রামের মো. মনির মেম্বারের ছেলে মো. রাসেল (৩২)। এদের মধ্যে মনির হোসেন ও জয়লান আবদীনের অবস্থা গুরুতর হওয়ার তাঁদের ঢাকা মেডিকেল পাঠানো হয়। আনোয়ার হোসেনের মাথায় ২০টি সেলাই করা হয়েছে। অন্যান্য রোগীদের বাঞ্ছারামপুর সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। অন্যদের নরসিংদী ও আড়াই হাজার হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বাঞ্ছারামপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত কর্মকর্তা ডা. মো. ফয়সাল কবির জয় বলেন, ‘কয়েকজন রোগীকে হাসপাতালে আনা হয়। তাঁদের যাদের অবস্থা গুরুতর তাদের ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দিয়েছি।’
উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘নিহত নয়নের পরিবারকে অনুদান দিতে গেলে বাড়িতে গেলে শাহিন চেয়ারম্যানের লোকজন ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা হামলা চালায়। হামলায় আমিসহ ২০-২৫ জন আহত হই।’
বাঞ্ছারামপুর উপজেলা তাঁতী দলের নেতা হাবিবুর রহমান হবি বলেন, ‘আমরা নয়নের কবরের পাশে গেলে তারা আমাদের ওপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় পুলিশ আদাদের বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে। আটক এড়াতে আমরা নৌকাযোগে পালিয়ে যাই।’
এদিকে সোনারামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের ও উপজেলা আওয়ামী লীগের ক্রিয়া বিষয়ক সম্পাদক মো. শাহিন মিয়া বলেন, ‘বিএনপির লোকেরা আমাদের উপড়ে হামলা করেছে।’
বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরে আলম বলেন, ‘যারা এই সংঘর্ষের সঙ্গে জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।’
উল্লেখ্য, গত ১৯ এ নভেম্বর কুমিল্লা সমাবেশকে সফল করার লক্ষ্যে লিফটে বিতরণের সময় বাঞ্ছারামপুর সদরে মোল্লা বাড়ির সামনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে সোনারামপুরে ছাত্রদল সভাপতি নয়ন মিয়া পুলিশের গুলিতে নিহত হন।